1. dainikbijoyerbani@gmail.com : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. hasan@dainikbijoyerbani.com : Hasan :
  3. zakirhosan68@gmail.com : dev : dev
হালখাতা’ আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি। - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ অপরাহ্ন
ad

হালখাতা’ আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি।

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১০৯ Time View

‘হালখাতা’ আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি।

মোঃ আবেদ আহমেদ-

হালখাতা এক সময় সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা উপজেলা সহ বাললাদেশের বিভিন্ন শহরে ধুমধাম করে হালখাতা অনুষ্ঠিত হলেও নতুন প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় নাগরিক জীবনে এ ঐতিহ্যের প্রভাব তেমন নেই। দেখা মেলে না নিত্যপণ্যের কোনো আড়তে ব্যবসায়ী-ক্রেতার বন্ধনের এ অনুষঙ্গটি।

‘হালখাতা’ আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানের হিসাব আনুষ্ঠানিক হালনাগাদের এ প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়েছে। তবে শহরে কিংবা গ্রামে এখনো ছোট পরিসরে পালন করেন কিছু ব্যবসায়ী। বছরের প্রথম দিনে ক্রেতাদের আপ্যায়নের মাধ্যমে তারা ‘খাতা’হালনাগাদ করে বকেয়া আদায়ের এই প্রথাটি ধরে রেখেছেন।

তবে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক ব্যবসায়ী তাদের ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ককে আজো অমলিন করে রেখেছেন। হালখাতার রীতি অনুসরণ করেই বৈশাখের প্রথম দিনে উৎসব উদযাপন করেন তারা। প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশেষ করে জুয়েলারি ও মুদি দোকানিরা ক্রেতাদের কাছ থেকে বকেয়া আদায়ের জন্য হালখাতার আয়োজন করেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের শেষদিন ধুঁয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নানা জাতের ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান। জুয়েলারিসহ কিছু প্রতিষ্ঠানের সামনে এরই মধ্যে ‘শুভ নববর্ষ’, ‘শুভ হালখাতা’ লেখা ব্যানার-ফেস্টুনও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইতিহাস মতে, ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০-১১ মার্চ সম্রাট আকবরের বাংলা সন প্রবর্তনের পর থেকেই ‘হালখাতা’র প্রচলন হয় তৎকালীন ভারতবর্ষে। পশ্চিমবঙ্গেও এ অনুষ্ঠানটি বেশ ঘটা করে পালন করা হয়। পুরনো বছরের হিসাব বন্ধ করে নতুন হিসাব খোলা হয় যে খাতায়, তা-ই ‘হালখাতা’ নামে পরিচিত।

বছর শুরুর দিন ভোরে দোকানপাট ধুঁয়ে, সোনা-রূপার পানি ও গোলাপ জল ছিটানো হতো। চৈত্রের মাঝামাঝি থেকেই বকেয়া রয়েছে এমন ক্রেতাদের কাছে হালখাতার দাওয়াত কার্ড পাঠানো হতো। এছাড়া লাল কাপড়ে মোড়ানো বা বাঁধাই করা মোটা খাতাটিই একসময় ক্রেতার সঙ্গে বিক্রেতার ব্যবসায়িক সম্পর্কের যোগসূত্র স্থাপন করতো। তবে এ সময়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিপণ্য কম্পিউটার দখল করে নিয়েছে এ খাতার জায়গা।

শ্রীমঙ্গলের কসমেটির্স ব্যাবসায়ী শিবলু আহমেদ নোমান বলেন, আগে বছরের প্রথম দিন নতুন খাতা খোলার জন্য হালখাতার আয়োজন ছিলো উৎসব। উৎসবে মিষ্টিমুখ করানো হতো ক্রেতাদের। এখন ঐতিহ্য মেনে কোথাও কোথাও হালখাতা হয়। কিন্তু ক্রেতারা আগের মতো সাড়া দেন না। কেউ ব্যাংকে কিংবা বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দেন। উৎসব হয় না আগের মতো।

অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটার রয়েছে। খাতার কাজ এখন কম্পিউটারই করছে। আগে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য ক্রেতাদের হাতে লেখা টালি (স্লিপ) দেওয়া হতো। এখন কম্পিউটারাইজড স্লিপ দেওয়া হয়। ফলে খাতা রাখার খুব একটা প্রয়োজন হয় না।

এসব কথার মিল পাওয়া গেল টালি খাতা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ইষ্টেশনারী দোকানে। চাহিদা কমে যাওয়ায় উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত বাপ-দাদার পেশা পরিবর্তন করে নতুন পেশা গ্রহণ করেছেন অনেকেই। এখন আর আগের মতো ‘হালখাতা’র জৌলুস নেই বলেই মনে করেন অনেকে।

লেখক- মোঃ আবেদ আহমেদ
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি