মীর দিনার হোসেন।।
বিশ্বের সকল দেশের সামরিক ব্যয় পর্যালোচনা ও সমীক্ষার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান 'স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট' সোমবার(২৫ এপ্রিল'২০২২) প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সামরিক ব্যয়ের সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবী অনুসারে, ২০২১ সালে বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় সর্বকালের সর্বোচ্চ দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে যা আগের বছরের তুলনায় ০.৭% বেড়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, বিশ্বব্যাপী এই সামরিক বোঝা (সামরিক ব্যয়) বিশ্বের মোট দেশীয় পণ্যের (জিডিপি) হার বিশ্বে ০.১ শতাংশ কমার পেছনে দায়ী। যেখানে বৈশ্বিক জিডিপি ২০২০ সালে ২.৩% ছিল সেখানে থেকে ২০২১ সালে ০.১ শতাংশ কমে ২.২% হয়েছে।
২০২১ সালে সামরিক ব্যয়ের শীর্ষ পাঁচটি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়া। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অনুসারে, এই পাঁচটি দেশ একত্রিত ব্যয় পৃথিবীর মোট সামরিক ব্যয়ের ৬২ শতাংশ ছিল।
গবেষনা প্রতিষ্ঠানটির মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের ব্যয় ছিল মোট সামরিক ব্যয়ের ৫২ শতাংশ। চীনের ব্যয় টানা ২৭ বারের মত বৃদ্ধি পেয়ে ২৯৩ বিলিয়ন ডলার,যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২১সালে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় প্রতিরক্ষা খাতে অনেক বেশি ব্যয় করেছে, তবুও পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কম ছিল।
আলেকজান্দ্রা মার্কস্টেইনার যিনি, এসআইপিআরআই-এর সামরিক ব্যয় এবং অস্ত্র উৎপাদন কর্মসূচির একজন গবেষক, উল্লেখ করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলিতে আরও বেশি মনোযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, "মার্কিন সরকার বারবার কৌশলগত প্রতিযোগীদের উপর মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছে।"
রাশিয়া ইতিমধ্যে ২০২১ সালে তার সামরিক ব্যয় ২.৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৬৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নিত করেছে। রাশিয়া ইউক্রেনীয় সীমান্ত লক্ষ্য করে তার বাহিনী গড়ে তুলতে এই ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, টানা তৃতীয় বছরের মত এই ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। ২০২১ সালে রাশিয়া তাদের মোট জিডিপির ৪.১% সামরিক ব্যয়ের পিছনে বরাদ্দ করেছে।
"২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল করার ফলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে দেশটি তার সামরিক ব্যয় ২০১৬ থেকে ২০১৯ হ্রাস করেছিল, বলেন লুসি বেরাউড-সুড্রেউ। লুসি স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট -এর সামরিক ব্যয় কর্মসূচি এবং অস্ত্র পণ্যের পরিচালক। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পর থেকে ইউক্রেন তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে দেশটি সামরিক ব্যয় ৭২% বৃদ্ধি করেছে বলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানায়।