আবীর হাসান স্বাধীন কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া কুমারখালীতে খাদিজা খাতুন ওরফে অন্তরা (২১) নামের এক গৃহবধুর গলাকাঁটা মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। শনিবার (৩ জুলাই) সকালে কুমারখালী থানার পিছন গেট সংলগ্ন রেললাইনের উপর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূর কুমারখালী পৌরসভার বাটিকামারা জনি শেখের স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী। পরে রেলওয়ে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, অন্তরা মানসিক রোগে ভুগছিলেন। বাড়িতে থেকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। মাঝেমাঝেই আত্মহত্মার চেষ্টা করতেন। গত ২৯ জুন দুপুরে ভাতের সাথে হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আত্মহত্যার বিষয় টের পেয়ে ওইদিন দুপুর ১ টায় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন অন্তরা।
আরো জানা গেছে, শনিবার (৩ জুলাই) ভোর ৫ টায় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় অন্তরা। এরপর আনুমানিক সকাল ৬ টা ৫০ মিনিটের দিকে হাসপাতাল ও থানার পিছন গেট সংলগ্ন রেললাইনের উপর গলাকাঁটা অবস্থায় তাকে দেখতে পাই স্থানীয়রা। পরে কুমারখালী থানা পুলিশ এসে রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেয়। রেলওয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মর্গে প্রেরণ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আকুল উদ্দিন বলেন, খাদিজা গত ২৯ জুন দুপুর ১ টায় হারপিক বিষ পান করে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরপর শনিবার ভোর ৫ টায় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
নিহতের স্বামী জনি শেখ বলেন, আমার স্ত্রী মানসিক রোগী ছিলেন। মাঝেই আত্মহত্যার চেষ্টা করতেন। কয়েকদিন আগে হারপিক খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। গতরাতে (শুক্রবার) হাসপাতালে একসাথে ছিলাম। সকালে আমি ওকে হাসপাতালে রেখে বাড়ি চলে আসি। পরে মোবাইলে শুনতে পাই স্ত্রী মারা গেছেন। তিনি আরো বলেন, মাথায় সমস্যা থাকার কারনে এরআগে নিজ সন্তানকে হত্যা করে অন্তরা।
নিহতের বাবা সিদ্দিক বলেন, বাড়িতে থেকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে অন্তরার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু সে পাগল না। আমার জামায় একজন নেশাখোর। সব সময় ওদের ঝগড়া চলত। গত ২৯ জুন পেটের ব্যথা কমানোর জন্য হারপিক খায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতালে ভর্তিই ছিল অন্তরা।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে যেমনই হোক, আত্মহত্যা করতে পারেনা। কিছু একটা নিশ্চয় হয়েছে। আপনার কোন অভিযোগ আছে কি না? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি তিনি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, নিহত ব্যক্তি মানসিক রোগী ছিলেন।
পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, কুমারখালী রেল স্টেশন প্লাটফর্ম থেকে তিনশ মিটার পশ্চিমে মালবাহী ট্রেনে কেটে এক গৃহবধুর নিহত হয়েছেন। গৃহবধূর গলাকাঁটা মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তত করা হয়েছে। পরে মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply