1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
অজানা ব্যাধি কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে সামাউনকে ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরন হবে কি এই সংগ্রামী জীবন যোদ্ধার - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
ad

অজানা ব্যাধি কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে সামাউনকে ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরন হবে কি এই সংগ্রামী জীবন যোদ্ধার

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১
  • ৯৯ Time View

সাজিদুল করিম,নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ

আজ থেকে পাঁচ মাস আগের কথা, সুস্থ, সবল স্বাভাবিক একজন মানুষ। সাহিত্য,সাংবাদিক, গৃহ শিক্ষক, মানবসেবক সহ নানা প্রতিভার অধিকারী সে । গত ২০২০ইং সালে সিংড়া উপজেলায় চলনবিল শিক্ষা উৎসব -২০২০ইং তে সফল যারা, কেমন তারা ক্যাটাগরিতে তরুন লেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক হিসেবে সম্মাননা পানও তিনি। সামান্য দু চারটে টিউশানি করে নিজের পড়াশোনা খরচ যোগান, সারাদিন পড়ানোর পড় রাতে নিজের পড়ালেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থী সামাউন আলী। সে ছোট বেলা থেকেই নিজের উপার্জিত অর্থে পড়ালেখা চালিয়ে আসছেন।

নিজের সকল দুঃখ কষ্টের ভাগাভাগি করার জন্য অসহায়, গরীব দুঃখী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার মানসে প্রতিষ্ঠা করেন প্রতিভা ছাত্র কল্যান সংস্থা। সেখানে তিনি প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও সে বাংলাদেশের একটি অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “পজিটিভ বাংলাদেশ ” এর নাটোর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে সে সমাজের গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে,প্রতি বছরের ন্যায়, বাৎসরিক ঈদে গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের কাছে ঈদ সামগ্রী বিতরন করেন, শীতকালে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল ও বন্যায় দুর্গত পরিবারদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরন করেন।
এছাড়াও সে তার টিউশানির টাকা দিয়ে বেশ কিছু মেধাবি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছেন, এমনকি অনেক মেধাবী গীরব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পঠিত বই এবং প্রাইভেট ফি ও ফরম পূরন ফি সে নিজে বহন করে তাদের পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছেন । অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এখন তাকে বাড়িতে শুয়ে বসে কাটাতে হচ্ছে মাসের পর মাস। অজানা এক রোগ তাঁকে প্রতিনিয়ত কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।

এই মেধাবী শিক্ষার্থীর সাহিত্য অঙ্গনে ও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন। সে পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত দু চার চরন লিখে যান।
সে সাহিত্য অঙ্গনে অনেক সম্মাননা অর্জন করছেন,সে বাংলাদেশের একটি অন্যতম সাহিত্য সংগঠন “গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ” এর নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা শাখার বর্তমানে “সম্পাদক ” হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত। তার লেখা অনেক গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ দেশের নানা পত্র- পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তার লেখা ২০ টির অধিক যৌথ কাব্যগ্রন্হ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রায় চার মাস আগের কথা, হঠাৎ করেই পা অবশ হয়ে পড়ে, তারপর সমস্ত শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা ও ঝাঁকুনি, এরপর থেকে করোনার কারনে বাসায় কয়েক মাস চিকিৎসা চলতে থাকে। এর মধ্যে রাজশাহী, নাটোর, সিংড়া তে দফায় দফায় ভাল ডাক্তার দেখান। কিন্তু পরীক্ষায় রিপোর্টে কোনো রোগ ধরা পড়ে না। অথচ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে শরীর। হেঁটে চলা ফেরা করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছ সে। লাঠি ভর করে বা অন্য কারো কাঁধে ভর দিয়ে খানিকটা হেঁটে যেতে পারে। কিন্তু পুরো শরীর কাঁপতে থাকে।

জানা যায়,এই মেধাবী শিক্ষার্থী সামাউন আলী নাটোর জেলার অন্তর্গত সিংড়া উপজেলার ০৮ নং শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দী গ্রামের বাসিন্দা, পিতাঃ মোঃ কালু প্রামানিক, মাতাঃ মোছাঃ সুজেদা বিবি। তার বাবা দীর্ঘ ২৫ বছর হলো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। কোনো কাজ করতে পারে না। অনেক বড় বড় ডাক্তার, কবিরাজ ও হেকিম চিকিৎসা করে ও মেলেনি কোন সু চিকিৎসা। তারা পারাবারিক ভাবে অসচ্ছলতা মধ্য দিয়ে দিন কাটায়, কিন্তু কোন দিন কারো কাছে হাত পাতেনি,এমতাঅবস্হায় তারা মেধাবী শিক্ষার্থী সামাউন এর চিকিৎসা করাতে হিমশিম খাচ্ছে এই পরিবার ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,মেধাবী শিক্ষার্থী সামাউন এর পরিবারে মোট পাঁচ জন সদস্য। তারা মোট তিন ভাই বোন। বড় ভাই সাজেদুর রহমান, ব্যাবস্হাপনা বিভাগ থেকে (এমবিএস) সম্পূর্ণ করে ও বেকার বাড়িতে বসে আছেন। অনেক চেষ্টায় ও জুটেনি একটা চাকুরী,অথচ সে বিভিন্ন চাকরীর লিখিত পরীক্ষায় টিকেও হয়নি একটা কর্মসংস্থান। অবশেষে বাড়িতে বসে দু চারটে টিউশানি করে সংসার চালান তিনি, কিন্তুু করোনায় সেটিও বন্ধ। ছোট বোন, কামরুন নাহার, সে অনার্স তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী।

মেধাবী শিক্ষার্থী সামাউন আলী,ভাগনাগরকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে ২০১৩ইং সালে এসএসসি পাশ করেন এরপর ২০১৫ ইং সালে সুদরানা টেকনিক্যাল বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। বর্তমানে সে সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই মেধাবী শিক্ষার্থী স্বপ্ন যেন তার আকাশ ছোঁয়া। তার বেড রুমে গিয়ে দেখা যায় পড়ার টেবিলে বিভিন্ন চাকুরী প্রস্তুতি বই -পুস্তক, সময় পেলেই সে টেবিলে বসে লেখা পড়া করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামাউন আলী বলেন, আমি পড়াশোনা শেষ করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই এবং একজন মানুষের মত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে চাই।
জানিনা বিধাতা আমার ভাগ্যে কি রাখছে, তবে আমি আমার শারীরিক অসুস্থতার মধ্য দিয়ে ও আমার পরিশ্রম আমি অব্যাহত রাখতে চাই। আমি জানি, বিশ্বাস করি পরিশ্রম করলে একদিন সফলতা আসবেই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার এই সংগ্রামী জীবন এর মধ্য দিয়েও স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারি।

তিনি আরো বলেন,আমার আকুল আবেদন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি মহোদয় আমাকে চলবিল শিক্ষা উৎসব -২০ইং এ আমাকে সফল যারা কেমন তারা সম্মাননা প্রদান করেন, তাই আমার আকুল আবেদন আমার এই দুর্দিনে এবং আমার সামনে ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরন, এমনকি আমার চিকিৎসার জন্য যেন তিনি আমার পাশে থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন এবং সেই সাথে আমাদের তিন ভাই বোনের মধ্য যে কোন একজনের একটা কর্মসংস্থান ব্যাবস্হা করেন দেন ।

এতো স্বপ্ন নিয়ে গড়ে উঠা সামাউনের স্বপ্নের সারথি কি আমরা হতে পারি না। আসুন আমরা তাঁর পাশে দাঁড়াই।বর্তমানে অসহায় এ পরিবারে উপার্জন করার মত কেউ নাই। করোনার কারনে সবাই বেকার এবং অসহায় জীবন যাপন করছে। তাঁর চলার মত একটা হুইল চেয়ার দরকার।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি