তীব্র গরমের সঙ্গে অতিরিক্ত লোডশেডিং, অতিষ্ঠ বগুড়াবাসী
বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরম আর সঙ্গে লোডশেডিংয়ে বগুড়ার মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জেলার জনজীবন। গরম থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যে অনেকেই ঘনঘন ঠান্ডা পানি পান করছেন, আর মাথা ভিজিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ একাধিকবার গোসল করা শুরু করেছেন।
এদিকে সারাদিনের খাটুনির পর রাতে স্বস্তির ঘুম থেকে বঞ্চিত থাকছেন শহরবাসী। রাতে যেমন বিদ্যুৎ চলে গিয়ে কোথাও আবার ভোরের দিকে এলেও সকাল হতেই ফের চলে যায় বিদ্যুৎ। তীব্র গরমে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের অভাবে কোনো কোনো গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গ্রাহকদের দাবি দিনে ৪ থেকে ৫ বার, আবার কোন কোন এলাকায় পাঁচ থেকে ছয়বারও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। একটানা দুই থেকে ৩ ঘণ্টার বেশিও লোডশেডিং হচ্ছে কোথাও। এতে কর্মজীবী মানুষের দৈনন্দিন কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। করোনা পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বাগড়া দিচ্ছে লোডশেডিং। বেঁচাকেনার সময়েও বিদ্যুৎ না থাকায় অলস সময় পার করছেন। তাদের অভিযোগ দিনে-রাতে গড়ে কয়েক ঘণ্টা করে ৬-৭ বারও হচ্ছে লোডশেডিং। পিক আওয়ারে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে কেনাবেচাও।
অপরিকল্পিত এমন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠমানুষ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করছেন। বিদ্যুৎ চলে গেলেই কেউ কেউ ব্যাঙ্গাত্মকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করছেন।
বগুড়া শহরের বড়গোলা টিনপট্রি এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, বেশ গরমের মধ্যেও দিনে চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যায়, এজন্য মাঝে মাঝে বাসায় পানিরও সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। একদিকে গরম, একই সঙ্গে মশার উপদ্রব, তার সাথে দেখা দিয়েছে পানির সঙ্কট। এইসব নিয়ে আমরা দিন পার করছি।
শহরের সাতমাথায় ডাব কিনতে আসা কালিতলা এলাকার বাসিন্দা সুমন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার বিদ্যুৎ যায়। প্রতিবার ১ ঘন্টা থেকে দেড় ঘন্টা লোডশেডিং ছিলো। রাতের অবস্থা আরো ভয়াবহ।
শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার মামুনুর রশিদ বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। এক সপ্তাহ ধরে শুধু রাতেই চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। বাচ্চাটার ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না।
বগুড়ার নেসকো-১ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোন্নাফ বলেন, আমাদের চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ না পাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হয়। চাহিদার ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্রাহক পাচ্ছেন। এলাকা ভিত্তিক বিদ্যুতের রেশনিং চলছে। এলাকা ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে ১ ঘন্টা করে লোড শেডিং দিতে হচ্ছে। এতে একই এলাকায় ৩ বার লোডশেডিং এর আওতায় পড়ছে।
Leave a Reply