মঠবাড়িয়ায় অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ।
বরিশাল প্রধান
শেখর মজুমদার
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় “অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আবাসন বরাদ্দের নিমিত্ত উপজেলা অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দ কমিটির চুড়ান্ত প্রতিবেদনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে উপজেলার অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোপ বিরাজ করচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে প্রজ্ঞাপনে ১.২.১ অনুচ্ছেদে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর পাওয়ার কথা থাকলেও অনেক অস্বচ্ছল, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী সহ এ ধরনের বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সরেজমিনে আর্তনাদের করুন চিত্র দেখাযায়। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার জেলা প্রশাসক বরাবর আপীল করেও কোন সুরাহা না পাওয়ায় অনিয়মের বিরুদ্ধে তারা রিট আবেদন করবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মতিয়ার রহমান মুক্তিবার্তা নং ০৬০৫০৬০৩৬৬ গেজেট নং ১০৫৯, ৭ নং বেতমোর রাজপাড়া ৩ নং ওয়ার্ডে বছরের পর বছর কাটাচ্ছেন ছোট্ট একটি খুপরি ঘরে ৭ সদস্য নিয়ে।সম্পত্তি বলতে মাথা গোঁজার ঠাঁই ছোট্ট এই খুপরি ঘরটি।উপজেলা কমিটি কর্তৃক আবাসন বরাদ্দের সুপারিশ থেকে বঞ্চিত তিনি।একই ইউনিয়নের আবাসন বরাদ্দের সুপারিশকৃত কোটিপতি সচ্ছল এক মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আপীল করেও ব্যর্থ হয়ে এখন ঘুরছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্বারেদ্বারে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফকর উদ্দীন মধ্য তুষখালী ৩ নং ওয়ার্ডে দোচালা ছাপড়া ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন। আবাসন নির্মাণের কথা শুনে আনন্দে দিন গুনছিলেন তিনি। কিন্তু সুপারিশকৃত তালিকায় নাম না দেখে হতাশ হয়ে পড়েন ৮৪ বছর বয়সী এ বীর মুক্তিযোদ্ধা।মন্ত্রনালয়ের সনদ নং ম-১১৬১৮৯ গেজেট নং ৮০৪ মুক্তিযোদ্ধা আইডি নং ০১০৬০৭০৪৮১।আবাসন বরাদ্দে সুপারিশ পাওয়া একই এলাকার সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ৩ বার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আপীল করে হেরে যান অসচ্ছল এ মুক্তিযোদ্ধা। উপজেলার গিলাবাদ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মুত.সুলতান আহমেদ শিকদারের স্ত্রী ঝুপড়ি ঘরে শীত ও বর্ষায় দুর্ভোগ মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে বিবাহ উপযোগী কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে উঠেছে বাবার বাড়ি।
এভাবে একাধিক অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বঞ্চিত রেখে তদস্থলে সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সুপারিশকৃত তালিকা প্রেরণে অনিয়মের অভিযোগ এনেছে বঞ্চিতরা।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার ড. অমিতাভ সরকার জানান,”৬ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে আপীলের সময়সীমা ছিল।এখানে আপীল করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেত।”
অন্যদিকে বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি-বিভাগীয় পর্যায়ে আপীলের সময়সীমা শেষ হওয়ার মুহূর্তে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত নোটিশ কৌশলে দৃশ্যমান করায় আমরা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আপীলের সুযোগ পাইনি।
Leave a Reply