রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানাধিন হেতম খান এলাকার স্বামীহারা গৃহবধু শাহানা (৩০) ননদদের অত্যাচার, নির্যাতন সইতে না পেরে এক মাত্র মেয়ে সানজিদা রহমান সুরভি (২) কে নিয়ে বাবার বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন।
সাহানা জানায় প্রায় ৩ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে হেতম খান বনপুকুর এলাকার মৃত. আব্দুর রহমানের পুত্র ময়েন উদ্দিনের সাথে তার বিয়ে হয়। এর মধ্যেই আমাদের দম্পতির ঘরে আসে একটি কন্যা সন্তান, তার নাম রাখা হয় সানজিদা রহমান সুরভি। বিয়ের প্রায় দুই বছর পর আমার স্বামীর হার্ট ব্লক হয়ে মারা যায়। আমার শ্বশুর-শ্বাশুরী আমার বিয়ের পূর্বেই মারা যান। আর স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার ননদরা আমাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি আইনের আশ্রয় গ্রহণ করি এবং কোর্টে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করি তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার সঠিক বিচার কার্য শেষ না হতেই আমার ননদ নাজরিন আক্তার (৪৫), নাসরিন আক্তার (৪০), বিলকিস (৩৫) ও নাজরিনের মেয়ে অহনা (১৮) আবারও গত ২৯ মার্চ আমাকে মারধোরসহ বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করে।
তিনি আরও বলেন, আমার ঘড়ের ফ্রিজ, সোকেস, আলমারী ও ডাইনিং টেবিল সহ সকল জিনিসপত্র কেড়ে নিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে তারিয়ে দেয়। সর্বশেষ মারার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমার স্বামীর একটি ফার্নিচারের দোকান আছে, যেটি তারা জোরপূর্বক নিয়ে নিতে চেয়েছিল। আমি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি না দিয়ে কন্যা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা করছিলাম। এক পর্যায়ে তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ দিলে একটি আপোষ মিমাংসা করে দেন তারা। যাতে বলা হয় যেহেতু ময়েনের স্ত্রী শাহানা তার স্বামীর ব্যবসা পরিচালনা করতে আগ্রহী তাই তাকে ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হলো এবং বিনিময়ে প্রতিমাসে ব্যবসার লভ্যাংশ বাবদ ১০,০০০ টাকা তার ননদদেরকে দিতে হবে। আমি সেটিও সঠিক সময়মতো পরিশোধ করি। কিন্তু সর্বশেষ ২৯ মার্চ তারা নতুনভাবে বিদ্যুৎ বিল না দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমার উপর অন্যায়ভাবে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং যাতে আর ফিরে না আসি সেই জন্য বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি প্রদান করে। পরে আমি বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি এর সঠিক বিচার না পাওয়া বিচার হীনতায় ভুগছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমি ও আমার পিতৃহারা একমাত্র কন্যার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে বাবার বাড়ীতে অসহায় ভাবে দিন পার করছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে শাহানার ননদরা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ন অস্বিকার করে উল্টো সাহানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের কথা বলেন। তবে জিনিসপত্র তাদের বাবা ও ভাইয়ের হওয়ায় কেড়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করে।
এ ঘটনায় সাহানার পিতা সাইদার আলী বলেন, আমার মেয়ের উপর ওরা অমানুষিকভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করে। আর এটিই প্রথম না এর আগেও চারবার নির্যাতন করেছে। আমি এর শুষ্ঠু বিচার চাই।
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply