হাকিকুল ইসলাম খোকন,, যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধি:
মহান আল্লাহর রাসূল, সর্বশেষ নবী, নূরনবী, প্রথম ও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির এই দুনিয়ায় শুভাগমনের মহাপবিত্র উপলক্ষ ১২ই রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহূ আলাইহে ওয়াসাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর উদ্যোগে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্থ নবান্ন রেস্টুরেন্ট হলে ৫ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার পবিত্র জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বাদ মাগরিব হতে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মাহফিল পবিত্র কোরআন, সালাতু সালাম ও নাত শরীফ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়। অত্র জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর চেয়ারম্যান শায়েখ আল্লামা আবু সুফিয়ান খান আবেদী আল-কাদেরী ও বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি আল্লামা আনসারুল করীম আজহারী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুর রহীম মাহমুদ, কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী, সহ-সভাপতিবৃন্দ মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, মুহম্মদ নাদের, আক্তার হোসাইন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদ্বয় মুতাসিম বিল্লাহ দুলাল ও মুহাম্মদ ওমর ফারুক, সংগঠনের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ মুহাম্মদ দিদার, নাজিম উদ্দীন, এরশাদ ওয়ারসী, ইসকান্দর হাশেমী, মাওলানা মোহাম্মদ নুরুন্নবী ফারুকী।খবর বাপসনিউজ।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দ কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, মীর মশিউর রহমান, গিয়াস আহমেদ, সরওয়ার জামান চৌধুরী, খুরশেদ খন্দকার, মাওলানা আবদুর রহীম, হেলালউল করীম, জসীম ইউ আহমেদ, নাজের উদ্দীন, এডভোকেট জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ। মাহফিলে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিল উদযাপন কমিটি ২০২১ এর আহবায়ক আক্তার হোসেন, সমন্বয়কারী মুহাম্মদ নাদের, সদস্যসচিব নাজিম উদ্দীন, যুগ্ম আহবায়কবৃন্দ মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, কাজী সাইদুর রহমান, মনিরুল ইসলাম মোমেন, মুরাদ মুজাদ্দেদী, যুগ্ন-সমন্বয়কারীবৃন্দ মুহাম্মদ দিদার, মুতাসিম বিল্লাহ দুলাল, সানাউল হক, মাওলানা মোহাম্মদ নুরুন্নবী ফারুকী, যুগ্ন-আহবায়কবৃন্দ ওমর ফারুক, এরশাদ ওয়ারসী, নবী হোসেন ও ইস্কান্দর হাসেমী। মাহফিল পরিচালনায় ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসীম সিদ্দিকী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ দুলাল।
মাহফিলে বিশিষ্ট আলেমবৃন্দ কোরআন সুন্নাহর আলোকে মহান নূরনবীর পবিত্র শুভাগমনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এ উপলক্ষকে ‘ঈদ’ হিসেবে পালনের জন্য সকল মুসলিমদেরকে আহ্বান জানান। আলেমগণ বলেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন শরিফে তাঁর রহমত প্রকাশের উপলক্ষকে খুশির বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে খুশি উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহ তা’য়ালা মহান নূরনবীর পবিত্র শুভাগমনকে উম্মতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ খুশীর উপলক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। সৃষ্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উপলক্ষ সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে নুজুলুন্নবী (সা.)। মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ আলোচিত এবং উদযাপিত হয়ে আসছে সর্বকালে। সকল নবীগণ তাঁদের বিশিষ্ট উম্মতদের মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ দিয়েছেন এবং অনেক নবীগণ তাঁর শুভাগমনের ঘোষণা দিয়েছেন যা কোরআন শরিফের অসংখ্য আয়াতে বর্ণিত রয়েছে। তাই যারা মহান মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে ঈদ বা খুশী মনে করে না, তারা নিজেরা বিভ্রান্ত ও মূর্খ। আর যারা এই উপলক্ষ পালনকে বিদআত মনে করে ও তা প্রচার করে তারা পথভ্রষ্ট, নবীদ্রোহী ও উগ্রবাদী বাতেল ফেরকা খারেজী ওহাবীবাদের অনুসারী।
মাহফিলে আলেমগণ বলেন, পবিত্র আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরাম মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমণ ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন। যাঁরা মহান নূরনবীর শুভাগমন ঈদ বা খুশী হিসেবে উদযাপন করে তারা মূলত নূরনবীকে পেয়ে খুশী, নূরনবীর উম্মত হওয়ার জন্য খুশী এবং প্রিয়নবীকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসার কারণে খুশী। এই পৃথিবীতে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের খুশী বা আনন্দের উপলক্ষ সকল ঈমানদারগণ সর্বযুগে পারিবারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদযাপন করেছেন। বিশেষ করে ইসলামী সন গণনার জন্য অন্যতম নির্নায়ক হিসেবে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে অসংখ্য সাহাবাগণ প্রস্তাব করেন, যদিও নূরনবীর প্রেমের আরেকটি উপলক্ষ পবিত্র হিজরতুন্নবী সাল গণনার জন্য প্রাধান্য পায়। হিজরতের স্মরণ ও নবীপ্রেমে নবীর শুভাগমনের ঈদ বা খুশী একাকার ও হিজরত নূরনবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দের অংশমাত্র। অতএব ইসলামের ইতিহাসের সর্বকালে সকল দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দ উদযাপিত হয়ে আসছে এবং অনন্তকাল তা হতে থাকবে।
মাহফিলে বক্তাগণ রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল দূতাবাসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর পক্ষ থেকে সবাইকে নবীপ্রেমে ইসলামের প্রকৃতধারা আহলে সুন্নাতের পতাকায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সালাতু সালাম, কিয়াম, বিশেষ মুনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে জশ্নে ঈদে নুজুলুন্নবী (সা.) তথা জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল সমাপ্ত হয়।
Leave a Reply