ইউএনও আর এসিল্যান্ড কি খায় আমি দেখবো! মোবাইল কোর্টে আ’লীগ নেতার বাঁধা
বেতাগী(বরগুনা)প্রতিনিধি:
বরগুনার বেতাগী পৌরশহরের অস্থায়ী বাজারে অতিরিক্ত মূল্যে ও কেজি প্রতি তরমুজ বিক্রির অভিযোগে মোবাইল কোর্ট চলাকালীন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট(এসি ল্যান্ড) ও এক আওয়ামী লীগ নেতার তর্ক বিতর্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে নিষেধ করেন এবং কড়া হুশিয়ারী দিয়ে বলেন ভ্রাম্যমান আদালতে যদি জরিমান করা হয়, তবে বেতাগী বাজার বন্ধ থাকবে ‘দেখবো ইউএনও আর এসিল্যান্ড কি খায়।’ ওই আওয়ামী লীগ নেতা বেতাগী সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম। তবে বিগত দিনে তিনি মাদক মামলার কারনে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয় এবং আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও হারিয়ে বেশ বিতর্কিত হয়েছেন।
জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় বেতাগীর তরমুজের বাজারো সিন্ডিকেটের দখলে। বেশ কয়েকটি হাত ঘুরে বৃদ্ধি করা হয় প্রতিটি তরমুজের মূল্য, বিক্রি হয় কেজিদরে। এতে সিন্ডিকেট চক্র লাভবান হলেও সাধারণ কৃষকদের কোন সুফল দিচ্ছেনা। বেশ কিছুদিন ধরে সারাদেশে এই সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বেতাগীতেও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার থেকে মোবাইল কোর্ট নিয়ে মাঠে নামেন বেতাগী উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছিলেন মোসা.ফারহানা ইয়াসমীন। শনিাবর দুপুরে বেতাগী পৌরশহরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার সময় আ’লীগ নেতা নজরুলের তোপের মুখে পরেন তিনি। যা সেই থেকে একটি ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে স্পষ্ট। ভিডিওতে ওই নেতা ম্যাজিষ্টেটকে বলেন, কি কারনে জরিমানা করবেন, কেনো করবেন, পেয়েছেন কি? আপনারা সরকারি চাকুরী করেন জরিমান আপানারা দিয়ে দেন । যদি জরিমান করা হয় তবে বেতাগীর মাছ বাজার বাজার, তরকারি বাজার, সব বন্ধ কওে দেওয়া হবে দেখবো ইউএনও আর এসিল্যান্ড কি খায়। করেন আপনি কতটাকা জরিমানা করবেন ? করেন। এই বলে ম্যাজিষ্টেটকে কড়া হুশিয়ারী দেন আ’লীগ নেতা নজরুল।
পৌরশহরের তরমুজ বিক্রেতা সুজন ও হেলাল বলেন, প্রতিশ’ তরমুজ ১৫ হাজার টাকা দামে ক্রয় করতে হয়। এরপর যদি এমন বাধা দেওয়া হয় তবে লাভ করবো কেমন করে। তাছাড়া সারা দেশেই তো কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট(এসি ল্যান্ড) মোসা. ফারহানা ইয়াসমীন বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতে বাধা দেয়া এটিও বড় ধরনের অপরাধ। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এ ধরনের আচারণ সত্যিই অশোভনীয়। আমরা অভিযোগ পেয়ে বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। ক্রয়মূল্য তালিকা ও বিক্রয়মূল্য তালিকা দেখতে চেয়েছি ততেই ওই আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আমার সাথে বিতর্ক শুরু করে দেয়। এমন হলে রাষ্ট্রিয় কাজ পরিচালনায় বিরম্বনা পোহাতে হবে। বিষয়ট ইউএনও স্যারের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করেছি তার ব্যবস্থা নিবেন।
এমন সকল অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও সম্পর্কে ওই আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি এরিয়ে যাওয়া যায় না? আমি যা বলার বলে দিয়েছি এ নিয়ে আমি আর কিছু বলবো না। বোঝেন কি নিউজ করলে জেল ফাঁস হবে।
এ ব্যাপরে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন,একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার সাথে জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন আচারণ তার ঠিক হয়নি। আমি জানতে চাইলে তিনি মোখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply