মোহাঃ ফরহাদ হোসেন কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
ঈদের ছুটিতে হঠাৎ ঢল নেমেছে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে। ঈদের দিন সকালের ঝড়-বৃষ্টিতে সেদিন তেমন লোকজন না আসলেও মুলত পরদিন থেকেই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতো ঢল নামতে শুরু করেছে দর্শনার্থীদের। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে এ বনের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে বনের অভ্যন্তরে গড়ে তোলা হয়েছে আরো চারটি নতুন পর্যটন কেন্দ্র। এছাড়া আরো বেশি দৃষ্টিনন্দনের কাজ চলছে করমজল, শেখের ট্যাক, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া, সহ অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতেও।
যদিও এখন সুন্দরবনে ভ্রমণ মৌসুম নয়। তারপর ঈদের ছুটি কাটাতে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে সুন্দরবনে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।
ঈদের ছুটিকে স্মরণীয় রাখতে কেউ আসছেন বন্ধু-বান্ধব আর কেউ পরিবারকে নিয়ে। যারাই আসছেন তারাই মুগদ্ধ হচ্ছেন বনের সৌন্দর্য্য দেখে। মন কাড়া এ সৌন্দর্য্যর বর্ণনা দেয়া কঠিন বলে বলছেন ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। খুলনা থেকে নদী পথে লঞ্চ / ট্রলার যোগে সুন্দরবনে প্রবেশে করে, দর্শানার্থীদের চোখে পড়ে নানান জীব বৈচিত্র্য । এরপর বনে প্রবেশের পর নানা ধরণের গাছপালা, পাখির কলকাকলি, হরিণ, বানর, গুইসাপ, বন্যশুকর, সজারুসহ বিভিন্ন প্রাণীর দেখা মেলে প্রস্তাবিত কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে । আর বনের গহীনে গেলে দেখা মিলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারেরও। কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে আসা পর্যটকদের মন কাড়ছে সেখানকার সৌন্দর্য্য। যারা প্রথম এসেছেন তাদের কাছে এর সৌন্দর্য্য বর্ণণার যেন ভাষা নেই। আর একবার যারা আসছেন সৌন্দর্য্যরে প্রেমে পড়ে তারা বার বারই ছুটে আসছেন এ বিশ্বের বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরনে।
কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনের খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া নাদীর তীরে অবস্থিত। সুন্দরবনের বিভিন্ন কেন্দ্রগুলোর মতো সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় স্থান এটি । তারপরও এটিতে আরো বেশি দর্শনার্থী আকৃষ্ট করতে সেখানে চলছে নানা ধরণের উন্নয়নমুলক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ও অবকাঠামোর কাজ। সেই সাথে পর্যটকদের জন্য এ বনের অভ্যন্তরে গড়ে তোলা হয়েছে আরো চারটি নতুন কেন্দ্র। উন্নত দেশগুলোর পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মত আকর্ষণীয় করে সুন্দরবনের স্পটগুলোকে সাজানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের কাশিয়াবাদ ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান । করোনার কারণে দীর্ঘ দুই বছর মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় ওই সময়টাতে পর্যটক কম ছিলো সুন্দরবনে। করোনা বিধি নিষেধ শিথিলের পর গেল শীত মৌসুমে কিছু পর্যটক হলেও ঈদের আগ পর্যন্ত অনেকটা পর্যটক শূণ্য ছিলো সুন্দরবন। আর বর্তমান সময়টা ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় এই সময়টা পর্যটক বিহীন থাকবে এ বন। আর সামনের শীতে আবারো সরব হয়ে উঠবে সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প। তবে মৌসুম না হলেও ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে এ বনে হঠাৎ আনাগোনা বেড়ে যায় দর্শনার্থীদের।
Leave a Reply