আবীর হাসান স্বাধীন কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর উপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ার পৃথক পৃথক স্থানে উপজেলা ছাত্রলীগ মানববন্ধন করেছে।
বুধবার (২৩নভেম্বর) ভেড়ামার ও দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধন করেন। গত ২২নভেম্বর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডস্থ একটি বাসা বাড়ি থেকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর উপর একদল ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষরা হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দুই উপজেলার ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এক মানববন্ধন করেন। হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওত্তায় এনে শাস্তির দাবী জানান দুই উপজেলায় মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি দায়ের করেছে ছাত্রলীগ নেতা শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের আত্মীয় ওই ভাড়া বাড়ির লোকজন।
ঘটনার বিষয়ে, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিমেল মন্ডল বলেন, কুষ্টিয়ার রাজনীতিকে কলুষিত করতে ও জেলা ছাত্রলীগের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী জামায়াত-বিএনপি নামধারী ছাত্রলীগ কর্মীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। ঘটনার বিষয়ে, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান বলেন, সাধারণ সম্পাদক চ্যালেঞ্জের জনপ্রিয়তা ও সুশোভিত রাজনীতিতে হিংসায় পড়ে পরিকল্পিত ভাবে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের শাস্তির দাবী জানান।
এদিকে দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আমন উল্লাহ আমান বলেন, সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার না হলে উপজেলা ছাত্রলীগ অনশন-ধর্মঘটের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাবে বলে ঘোষনা দেন।
মুঠফোনে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে মূলত বিরোধ সৃষ্টি হয়। বেশকিছু দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। গত কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়ায় এসেছি। দুপুরে জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকার অফিসে দেখা করতে যায়। সেখানে কয়েকজন আমাকে রেকি করছিল। সেখান থেকে আমার খালার বাসায় যায়। সেখানে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগকর্মীরা গিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে আমাকে মারপিট করে। তিনি আরো বলেন, আমার কি দোষ? আমার কি অপরাধ? আমি জামায়াত-ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি এটা কি আমার অপরাধ? তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। দল ক্ষমতায় থাকতেও আমি হামলার শিকার হলাম। আমি আমার নেতা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপির কাছে বিচার দিয়েছি। করোনাকালীন সময়ে আমি ও আমার ছেলেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে কাজ করেছি। তার এই প্রতিদান পেলাম। আমি বিচার চাই, বিচার চাই বলে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
প্রসঙ্গত; শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ আরো বলেন, মঙ্গলবার ২২নভেম্বর দুপুরের দিকে চ্যালেঞ্জ তার খালায় বাসায় যান। তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষে গল্প করছিলেন। এ সময় শহর ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক প্রতিপক্ষের লোকজন ওই বাসায় গিয়ে চ্যালেঞ্জের খোঁজ করতে থাকে এবং হত্যার হুমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে টয়লেটের ফলস ছাদে আশ্রয় নেন চ্যালেঞ্জ। প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশ করে এবং ফলস ছাদ থেকে চ্যালেঞ্জকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনে এমন একটি ভিডিও গনমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। এসময় তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং ওই বাড়িতে ভাংচুর করে। এরপর তাকে লাঠি ও রড দিয়ে পেটাতে পেটাতে রাস্তায় নিয়ে আসে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এতিকে ভিডিওতে দেখা যায় হাসিব কোরাইশী শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর হাত ধরে টানাটানি করছে ও তার কর্মীরা মারধর করছে। এসময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। পরে পুলিশের গাড়িতে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খান এর সাথে মুঠফোনে কথা হলে তিনি বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর উপর হামলার বিষয়ে তার খালার বাসার আত্মীয় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে উপযুক্ত প্রমান পেলে দোষীদের আইনের আওত্তায় আনা হবে বলে জানান।
Leave a Reply