1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
জাতিসংঘে মিয়ানমার নিয়ে পাস হওয়া প্রস্তাবে ‘হতাশ’ বাংলাদেশ - dainikbijoyerbani.com
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
ad

জাতিসংঘে মিয়ানমার নিয়ে পাস হওয়া প্রস্তাবে ‘হতাশ’ বাংলাদেশ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১
  • ৮০ Time View

হাকিকুল ইসলাম খোকন,, যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধি:

সামরিক অভ্যুত্থান পরবর্তী মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে তোলা একটি প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি ‘যথাযথভাবে না আসায়’ হতাশা প্রকাশ করে ভোটদানে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘে ওই ভোটাভুটির পরদিন ১৯ জুন ২০২১, শনিবার এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে একটি বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৮ জুন ২০২১, শুক্রবার সাধারণ পরিষদে বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল যে কারণ, তা স্বীকার করে না নিলে এবং তার সমাধানে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা না হলে মিয়ানমার বিষয়ে যে কোনো প্রস্তাব ‘অসম্পূর্ণ’ থেকে যাবে।

‘২০১৭ সালে যে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানো হল, তারপরও সঙ্কটের মূল কারণগুলো স্বীকার করে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতায় মিয়ানমারে এক ধরনের দায়মুক্তির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে; এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, অন্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে।’

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসা চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা আগে থেকেই বাংলাদেশের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছিল। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনের গ্রামে গ্রামে নতুন করে দমন অভিযান শুরু করলে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।

এরপর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলেছে জাতিসংঘ।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা সামরিক জান্তার নিন্দা জানিয়ে শুক্রবার একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।

সেখানে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি অং সান সু চি-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটিতে ১১৯টি দেশ ওই প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে; বিপক্ষে ভোট দিয়েছে কেবল বেলারুশ।

আর ৩৬টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল, যাদের মধ্যে রাশিয়া ও চীনকে মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই দুটি দেশ মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি অস্ত্রও বিক্রি করে।

বাংলাদেশ কেন ভোটদানে বিরত থাকল, সেই ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে নিজ বাসভূমে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য কোনো সুপারিশ কিংবা পদক্ষেপের কথা ওই প্রস্তাবে রাখা হয়নি। এমনকি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন, সে বিষয়েও কিছু বলার বা জোর দেওয়ার কোনো চেষ্টা ওই প্রস্তাবে ছিল না।

“সামগ্রিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের যে মূল কারণ, তা স্বীকার করে নিতে আগ্রহের ঘাটতি ছিল ওই প্রস্তাবে।”

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মানার কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। তবে পাস হওয়া প্রস্তাবে যে ভাষায় মিয়ানমারের জান্তার নিন্দা করা হয়েছে, তা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ইতিহাসবিদদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর এ নিয়ে মাত্র চতুর্থবারের মত সাধারণ পরিষদ কোনো দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের সমালোচনা করে কোনো প্রস্তাব পাস করল। অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এমন আহ্বানও বিরল।

শুক্রবার যারা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, তাদের মধ্যে জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত কাইউ মোয়ে তুন একজন, যিনি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। পদত্যাগ করতে জান্তা সরকারের নির্দেশও তিনি মানেননি।

জাতিসংঘ এই প্রস্তাব পাস করতে এতো দীর্ঘ সময় নেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন কাইউ মোয়ে তুন। পক্ষে ভোট দিলেও তার ভাষায় ওই প্রস্তাব ‘যথেষ্ট দুর্বল’।

নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে মিয়ানমারের প্রতিবেশী চীনের ভোটদানে বিরত থাকার বিষয়টিও বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে, কেননা এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে একই ধরনের প্রস্তাবের সরাসরি বিরোধিত করেছিল ভোটো ক্ষমতার অধিকারী এই দেশটি।

মিয়ানমারে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। সাম্প্রতিক সময়ে চীন সরকারের বিভিন্ন আচরণে এমন ধারণা হওয়াই স্বাভাবিক যে জান্তা সরকারকে বৈধতা দিতে তাদের ‘আপত্তি নেই’।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে যা যা ঘটেছে, সেসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ এ পর্যন্ত নিরপাত্তা পরিষদ নিতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে কূটনীতিবিদ ও অধিকারকর্মীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা শুক্রবার সাধারণ পরিষদের বলেন, “মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান এবং বাস্তচ্যুত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ওপর সামরিক অভ্যুত্থানের যে প্রভাব, সে বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বক্তব্য আসায় আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম।

‘ফলে আজ যখন সাধারণ পরিষদ এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে প্রস্তাব তুলতে গিয়ে সেই অবস্থান থেকে সরে গেল, বিষয়টি আমাদের হতাশ করেছে। সাধারণ পরিষদের এই ভূমিকা ভুল সংকেতকই দেবে।’

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি