জীবননগরের উথলী শাখার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন
মোঃ-আলমগীর হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি,,
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী শাখার সোনালী ব্যাংকে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে অস্ত্রের মুখে ডাকাতির ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশকয়েকজনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও টাকা।
গত নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখে বেলা ১টা ১০ মিনিটের সময় উথলী শাখার সোনালী ব্যাংকে গ্রাহক সেজে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে নগদ ৮ লাখ ৮২ হাজার ৯ শত টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত। ঘটনার পর থেকেই জীবননগর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতে থাকে। কিন্তু ব্যাংকে কোন সিসি ক্যামেরা না থাকা এবং আসামিরা পিপিই পড়ে থাকায় তাদের সনাক্ত করাসহ আটক করতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অপরাধীদের ফেলে যাওয়া খেলনা পিস্তলের ভাঙা অংশ বিশেষ উদ্ধার করার পর তার সূত্র ধরে এগোতে থাকে পুলিশ। আটক করা হয় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী জীবননগর উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি (ফকিরপাড়া) গ্রামের রফিক উদ্দিনের ছেলে সাফাতুজ্জামান রাসেল (৩০), একই এলাকার জাহাঙ্গীর শাহ এর ছেলে রকি শাহ (২৩) এবং দেহাটি বাজার পাড়ার মৃত আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর ছেলে হৃদয় আহম্মেদের।
মঙ্গলবার (১৫ই ডিসেম্বর) রাত ৪টার দিকে যশোরের চৌগাছা থানা এলাকা থেকে সাফাতুজ্জামান রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করা হয় নিজ নিজ বাড়ি থেকে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামিদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে সাফাতুজ্জামান রাসেলের কাছ থেকে ডাকাতির নগদ ২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, একটি টিভিএস মোটরসাইকেল, খেলনা রিভলবারের ভাঙা অংশ, একটি চাপাতি, একটি সাদা রংয়ের পিপিই ও একটি হেলমেট উদ্ধার করা হয়। আসামি রকির নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা ও একটি চাপাতি অপর আসামি হৃদয়ের নিকট থেকে উদ্ধার করা নগদ ৩০ হাজার টাকা, একটি ল্যাপটপ, একটি লাল রংয়ের হিরো হোণ্ড মোটরসাইকেল।
আসামিদের অপরাধের কথা জেনে যাওয়ায় তারা দেহাটি (ফকিরপাড়া) গ্রামের মফিজুল শাহ’র ছেলে মাহফুজ আহাম্মেদ আকাশ (১৯) কে নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং সেকেন্দার মণ্ডলের ছেলে হাবিবুর (১৯) কে নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করে ঘটনা কারো সাথে না বলার জন্য। এই দুই আসামিকে আটক করার পর মাহফুজ আহাম্মেদ আকাশের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ৩৯ হাজার টাকা।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঙ্গলবার (১৫ই ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় উপরোক্ত ঘটনা নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। এদিকে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এমন একটি ক্লিহীন ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারায় পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম এবং জীবননগর থানার ওসি সাইফুল ইসলামসহ অভিযান পরিচালনাকারী টিমের প্রত্যেক সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন জীবননগরসহ পুরো চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী।
Leave a Reply