আবীর হাসান স্বাধীন কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার প্রচার প্রচারনায় রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের একজন বিতর্কিত ও নানা অপকর্মের হোতা চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজ মন্ডল জাতীয় পতাকার উপর নৌকার (আদলে) তোরণ নির্মান করার ঘটনায় দৌলতপুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতিপূর্বে তিনি অবৈধ ডিস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি তার গাড়িতে একাধিক ভারতীয় অবৈধ ফেনসিডিল পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে তিনি পুনরায় নৌকার কান্ডারী হয়ে দেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে নৌকার ক্যাম্প তৈরি করে যাচ্ছেন। তার ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে আর কিছুদিন পর দেশের মানচিত্র বিক্রি করে খাবে।
নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্পের উপরে জাতীয় পতাকার উপর লিখে রেখেছেন সিরাজ মন্ডল কে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের নজরে এলে এলাকার সুধীজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সিরাজ মন্ডলের বিচার দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বেলা ২টার দিকে তোরণটি তৈরী করা হয় দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত বাজার এলাকায়। সারা বাংলাদেশের ন্যায় এ মাসের ২৮ নভেম্বর কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৩য় ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তারই প্রচার প্রচারনার অংশ হিসেবে ওই নৌকার আদলে তোরণ নির্মান করা হয়।
নৌকার আদলে তোরণটির মাঝে লাল এবং দুপাশে সবুজ রঙে সৃজন করা হয়। জাতীয় পতাকার অনুকরণে নৌকা তৈরী করায় তখনই এলাকার অনেকে প্রতিবাদ জানায়। এতেও কর্ণপাত না করে নির্মানকারী কাজ শেষ করে। এলাকাবাসী বলে, এ ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। নৌকার তোরণ জাতীয় পতাকার আদলে করা হয়েছে কার নির্দেশে? তার বিচার চায় এলাকাবাসী।
মনি ডেকোরেটরের নির্মানকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজ মন্ডলের নির্দেশ মতে তোরণের বিভিন্ন অংশে রঙের কাজ করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নেট ঘেটে দেখেছি এমন কাজ অনেক হয়েছে তাই আমিও করেছি এবিষয়ে তিনি ক্যামেরার সামনে কোন বক্তব্য দিতে রাজি নন।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান বিষয়টিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনে অবাক হই। আমাদের মহান জাতীয় পতাকার আদলে নৌকার তোরণ নির্মান করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
জাতীয় পতাকা বিধিমালায় সুস্পষ্ট ভাবে বর্নিত আছে,
“সর্বদা পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করিতে হইবে। পতাকা দ্বারা মোটরযান, রেলগাড়ী অথবা নৌযানের খোল, সম্মুখভাগ অথবা পশ্চাদভাগ কোন অবস্থাতেই আচ্ছাদিত করা যাইবে না। বাংলাদেশের পতাকা’ কোন কিছুর অচ্ছাদন হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না”।
এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার খন্দকার সহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি শাহীন আফরোজ খসরু বলেন, জাতীয় পতাকা নিয়ে যদি কোনো অবমাননার ঘটনা ঘটে তাহলে তার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আঃকাঃমঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ বলেন, যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
Leave a Reply