সোহেল মিয়া, (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপরোয়া জুয়ার আসর। এর ফলে বিপথগামী হচ্ছে তরুণ ও যুব সমাজ। কিন্তু এসব প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ সমাজের কেউই এগিয়ে আসছেন না। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তা দেখেও না দেখার ভান করছে।
জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে অন্ততঃ দুই ডজন হাটবাজার ছাড়াও রয়েছে অর্ধশতাধিক পয়েন্ট। এসব স্থানে প্রতিনিয়ত চলছে জুয়া খেলা। করোনা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুবাদে এসবে জড়িয়ে পড়েছে যুবকদের পাশাপাশি ছাত্ররাও। চা ও মুদি দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকানসহ সকাল সন্ধায় যত্রতত্র বাজি ধরে চলছে তাস, গাফলা, লুডু ও ক্যারম খেলার আড্ডা।
উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাইরগাঁও খেয়াঘাট, চাইরগাঁও, সারপিন পাড়া, সোনাপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে সকাল সন্ধ্যা জুয়ার আসর। ইউনিয়নের
শ্যামারগাঁও গ্রামের তাজিলের দোকানে ও ব্যাপরোয়া ভাবে তাস ও গাফলা দিয়ে বসে জুয়ার আসর।
স্থানীয় সোনালি চেলা বিজিবি ক্যাম্পের টহলরত সীমান্তরক্ষীদের চোঁখে ধূলো দিয়ে ভারত সীমান্তের জিরো পয়েন্টে চেলানদীর পাড়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় চলে আসছে জুয়ার আসর। এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতেও গড়ে ওঠেছে জুয়ার আস্তানা। এ নিয়ে প্রায়ই দু’পক্ষে উত্তেজনা কিংবা মৃদু সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউড়া মার্কেটের ইসমাইল, তোরাব আলী, উত্তর কলাউড়া খোকন মিয়া, বাঁশতলার হানিফ মিয়া।
পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের শিহাব উদ্দিন, জলসি গ্রামের আঙ্গুর মিয়া এবং হাফিজ উল্লাহর দোকান, নলুয়া, উষাইর গাঁও ও বড়কাপন-শ্রীপুর সড়কে অবস্থানরত বিভিন্ন দোকানসহ জলসি উঁচু ব্রীজের পাশে প্রতিনিয়ত বসে উঠতি যুবকদের জুয়ার আড্ডা।
এছাড়া উপজেলার ব্রিটিশ পয়েন্ট, চৌমুহনী পয়েন্ট, রাবার ড্যাম, হকনগর, বালিউরা, নাছিমপুর, নরসিংপুর, বগুলা, কান্দাগাঁও, মহব্বতপুর, টেংরা, টেবলাই, আমবাড়ি, কাটাখালি, শ্রীপুর, দোহালিয়া, জলসি চানপুর, লিয়াকতগঞ্জ, শ্যামলবাজার, বান্দের বাজার, বঙ্গবন্ধু বাজার, পূর্ব ও পশ্চিম বাংলাবাজারসহ উপজেলার অধিকাংশ হাটবাজার ও বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্যাট বা টাকার বাজিতে বছরজুড়ে জুয়ার আসর বসলেও দেখার কেউ নেই।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাবাজার ইউপির কলাউড়া মার্কেটের মুদি দোকানদার তোরাব আলী বলেন, আমার দোকানে একটি গাফলা ও ক্যারাম বোর্ড আছে সত্য। অতিথে মানুষ সময় কাটানোর জন্য খেলতো। করোনার কারনে এখন আর খেলা হয়না। তবে এখানে টাকার বিনিময়ে কোন প্রকার খেলা হতো না।
দোকানদার ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমার দোকানে একটি ক্যারাম বোর্ড আছে, এলাকার ছেলেরা কোন প্রকার বাজি ছাড়াই সময় কাটানোর জন্য মাঝে মধ্যে খেলতে বসে।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর বলেন, জুয়া, মাদক, চোরাচালান ও দুর্নীতি নির্মূলে জনগণকে সচেতন হতে হবে। এসব বন্ধে পুলিশ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের গ্রেফতার করছি। জুয়া,মাদক, চোরাচালান ও দূর্নীতি নির্মূলে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
Leave a Reply