রাব্বী আহমেদ কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় ও ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়ার ৬ বছর পর বাবা-মা ফিরে পেল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলে রাকিবকে (১২)। রোববার (১১ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে পরিবারের সদস্যদের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ। এ সময় হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হইয়ে পড়েন তারা।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে ঝড়ে রাকিব কুমারখালী এলাকার এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ওই বাড়িতে দুদিন ছিলেন। তার অভিভাবক বা ঠিকানার কোনো খোঁজ না পেয়ে গত বুধবার (৭ জুন) সকালের দিকে কুমারখালী থানায় রাকিবকে রেখে যান স্থানীয়রা। এরপর কুমারখালী থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় ও ফেসবুকের কল্যাণে তার মা-বাবা রোববার দুপুরের দিকে কুমারখালী থানা এসে তাকে নিয়ে যান। রাকিব ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার জগন্নাথদি গ্রামের রত্মা খাতুন ও মোস্তফা ফকিরের সন্তান। সে এতোদিন ট্রেন স্টেশন, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন জায়গায় ভাসমান পথশিশু হিসেবে থেকেছেন। এরআগে একবার কুমারখালী থানা পুলিশ রাকিবকে কুষ্টিয়া শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে ঘরোয়া জায়গা পছন্দ করতো না, কান্নাকাটি করতো। সে সেখান কিছুদিন থাকার পারে চলে গিয়েছিল। রাকিবের মা-বাবা বলেন, আমার ছেলে রাকিব ছোট থেকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সে প্রায় ৬ বছর আগে বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়। সে সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর। আমরা বিভিন্ন জায়গায় তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু খুঁজে পাইনি। তাকে না পেয়ে ভেবে নিয়েছিলাম রাকিব হয়তো বেচেঁ নেই। পরে কুমারখালী থানা পুলিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাকিবের ছবি ছেড়ে দেয় এবং তার পরিবারের সন্ধান করে। সেই খবর আমাদের গ্রামের একজন দেখতে পায় এবং আমাদের জানান। পরে আজ আমরা কুমারখালী থানায় এসে রাকিবকে পেলাম। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। কুমারখালী থানা পুলিশকে ধন্যবাদ। তাদের সহযোগিতায় আমারা রাকিবকে ফিরে পেলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসিন হোসাইন বলেন, গত বুধবার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু রাকিবকে কুমারখালী থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। এরপর তাকে আমরা আমাদের হেফাজতে রাখি। পরে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলি এবং তার ঠিকানা জানার চেষ্টা করি। কিন্তু সে তার ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে পারেনি। তাই রাকিব নামের এক শিশু পাওয়া গেছে এই মর্মে সারা দেশের প্রত্যেক থানায় ম্যাসেজ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাকিবের সন্ধান পেতে কুমারখালী থানার ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেই পোস্ট দেখে ফরিদপুর জেলার সালথা থানা এলাকা হতে রাকিবের বাবা মোস্তফা ফকির ও মা রত্মা খাতুন থানায় আসেন আজ। রাকিব তাহার বাবা-মাকে দীর্ঘ ৫-৬ বছর পর দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
Leave a Reply