1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
মাটিরাঙ্গায় মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের নামে ভুয়া প্রকল্প - dainikbijoyerbani.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
ad

মাটিরাঙ্গায় মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের নামে ভুয়া প্রকল্প

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১
  • ৫৬৬ Time View

মাটিরাঙ্গায় মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের নামে ভুয়া প্রকল্প

এ এম ফাহাদ (খাগড়াছড়ি) : সরকারিভাবে প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের জন্য, অথচ সেই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন অন্য একটি পুকুরে। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ইউনিয়নের মধ্য গড়গড়িয়া পাড়া জামে মসজিদের জন্য বরাদ্দ প্রকল্প লোপাট হচ্ছে এভাবেই।

এতে ক্ষুব্ধ মুসল্লি ও এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এর সাথে জড়িত থাকায় ভীত হয়ে প্রকাশ্যে অভিযোগ করতে পারছেন না কেউই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর তিনেক আগে মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী ও মুসল্লিদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে একটি আবেদন করা হয়। দীর্ঘ দুই বছর অতিবাহিত হলেও কোন সাড়া না পাওয়ায় গত বছর স্থানীয়রা নিজেদের টাকায় মসজিদের পুকুরটিতে ঘাট নির্মাণ করে নেন।

সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গেলো বছরের ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ আসে মধ্য গড়গড়িয়া পাড়া জামে মসজিদের পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণ কাজের। ওই পুকুরটি খননে ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৫ টাকা এবং ঘাট নির্মাণের জন্য ৬ লাখ ৯৭ হাজার ১৯ টাকা চুক্তিমূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। খনন কাজের জন্য ‘ফারহানা আকতার’ ও ঘাট নির্মাণে ‘রুবেল এন্টার প্রাইজ’ নামে পৃথক দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনুমতি পায়। ঘাট নির্মাণের কাজ এখনো শুরু না হলেও ইতোমধ্যে খননের কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়ে গেছে। তবে তা হচ্ছে মসজিদের পাশ্ববর্তী প্রবাসী বাবুল হোসেন এর পুকুরে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মসজিদের পুকুরটি একেবারে মসজিদ লাগোয়া। ওই পুকুরে কোন কাজ করা হচ্ছে না, কাজ চলছে পাশ্ববর্তী অন্য একটি পুকুরে। বরং মসজিদের পুকুরে আগে থেকেই নির্মিত শানবাঁধানো একটি ঘাটলা চোখে পড়েছে। আর যে পুকুরে প্রকল্পটির কাজ চলছে সেই পুকুর থেকে মসজিদের কিছুটা দূরত্বও রয়েছে। এছাড়া ওই পুকুর থেকে মসজিদে যাতায়াতের জন্য প্রশস্ত কোন রাস্তাও নেই।

খনন কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘ফারহানা আকতার’ -এর সত্ত্বাধিকারী মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পটির খনন কাজ আমার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে হলেও উপ-ঠিকাদার হিসেবে এর তত্ত্বাবধান করছেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী।’

খনন কাজের উপ-ঠিকাদার মাটিরাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সার্ভে করে যেখানে খনন করার নির্দেশ দিয়েছেন আমরা সেখানেই খনন করছি।’

ঘাট নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মো. মোস্তফা বলেন, ‘যে পুকুরটিতে ঘাট নির্মাণের জন্য বলা হয়েছে সেই পুকুরটি নিয়ে অভিযোগ আছে জানতে পেরে এখনো ঘাট নির্মাণ কাজ শুরু করিনি।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) তন্ময় নাথ জানান, ‘আমি কিছুদিন পূর্বে মাটিরাঙ্গা উপজেলার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। পূর্ববর্তী প্রকৌশলী ওই পুকুরটি সার্ভে করে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে ভালো তথ্য দিতে পারবেন।’

পূর্ববর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন বলেন, ‘আমি মসজিদের পুকুরটি সার্ভে করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। পার্শ্ববর্তী কোন পুকুর সার্ভে করিনি। সার্ভে করার সময় দেখেছি মসজিদের পুকুরে আগে থেকেই ঘাট নির্মাণ করা। তবুও মুসল্লী ও স্থানীয়দের অনুরোধে মসজিদের পুকুরটি পুনরায় খনন এবং আরেকটি ঘাট নির্মাণ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম। এরপর আমার বদলি হওয়ায় আমি ফেনীতে যোগদান করি।’

তবে এক পুকুরে সার্ভে করার পর অন্য পুকুরে প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন সুযোগ নেই। মসজিদের পুকুর বাদ দিয়ে পাশ্ববর্তী যে পুকুরে কাজ চলছে তা নিয়ম বহির্ভূত বলেও জানিয়েছেন পূর্ববর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন।

এলাকাবাসী ও মুসল্লিদের অভিযোগ, মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে প্রকল্পটি প্রবাসী বাবুল মিয়ার পরিবারের কাছে গোপনে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

প্রবাসী বাবুল হোসেনের ছেলে গোলাম কিবরিয়া’র কাছে জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে রাজী হননি তিনি।

তবে অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করেছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম হোসেন।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল ভূঁইয়া’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোন ব্যাখ্যা দিতে পারবো না।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহজাহান সিরাজের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান বলেন, ‘এই প্রসঙ্গে একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই উপজেলা প্রকৌশলীকে তা তদন্ত করে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

একইসাথে পুকুর খনন ও ঘাট নিমার্ণের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন কাজ করা হবে না বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি