বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
পাওনা টাকার শালিসতে থানায় যাওয়ার পথে স্থানীয় আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ আহত হয়েছেন। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁসতলা বাজারে শুক্রবার (১৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫ টায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত যখম অবস্থায় এদিন আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সাল ইসলাম স্বর্ণ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আহতদের প্রায় সবারই মাথা ফাটা, এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত যখম রয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডাঃ ফয়সাল বলেন আহতরা হচ্ছেন, বেল্লাল খাঁন (৪০), রিপন খাঁন (৩৫), আউয়াল খাঁন (৩০), ইমামুল খাঁন (২০), ইয়াসিন শেখ (২৭), সাউদ খাঁন (৩৫), লিয়াকত খাঁন (৬০), দেলোয়ার শেখ (৪০), টুকু মোড়ল (৩৫), নুর ইসলাম মল্লিক (৪৫), শামসু খা (৬৫), দেলোয়ার হোসেন (৪০), নুরুল আমিন (৩৮) ও মাসুদ গাজী (৩৫)। এদের সবার বাড়ী সুন্দরবন ইউনিয়নের বাসতলা গ্রামে বলে জানা গেছে। আহতদের এক গ্রুপ সুন্দরবন ইউনিয়নের আ’ লীগ নেতা একরাম ইজারাদার এবং অপর গ্রুপ আহাদুল মেম্বারের অনুসারী বলে জানা গেছে। এ বিষয একরাম ইজারাদার বলেন, শালিসিতে যাওয়ার পথে আহাদুল মেম্বারের লোকজন দা এবং রামদা দিয়ে কুপিয়ে যখম করে। তবে আহাদুল মেম্বার বলেন একরামের লোকজনই তার লোকদের কুপিয়েছে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, থানায় একটা শালিসিতে আসার পথে স্থানীয় দুটি গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। এঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সুন্দরবন ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শেখ কবির উদ্দিন বলেন, স্থানীয় কবির ও জামাল ফকিরের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে শুক্রবার মোংলা থানায় শালিসি হওয়ার কথা ছিল। এ শালিসিতে আসার পথে বাঁসতলা বাজারে এদের মধ্যে গাড়িতে ওঠা নিয়ে তর্ক শুরু হয়। এর একপর্যায়ে দু’গ্রুপের পেশি শক্তির মহড়ায় সেটি সংঘর্ষে রুপ নেয়। সবাই দা এবং লোহার রড নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে শুনেছে তিনি। এতে বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত যখম হয়, আহতরা সবাই আ’ লীগের রাজনীতি করেন বলেও জানান চেয়ারম্যান। পরে গুরুতর অবস্থায় তাদের স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় বাঁসতলা গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বড় ধরনের যে কোন সংঘর্ষ এড়াতে সেখানে পুলিশ অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ’লীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে এ পর্যন্ত অন্তত ১৫ টিরও বেশি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মামলা বিচারাধীন বলে জানান মোংলা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী।
Leave a Reply