শাল্লা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম যেন দেখার কেউ নেই!
বকুল আহমেদ শাল্লা প্রতিনিধি-
বর্তমান সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় দেশের সবকটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় প্রায় ১৪কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদের কাজ গেল বছরে শুরু হয়েছে।
শুরু থেকেই কাজে ধীরগতি, নানা অনিয়ম ও নি¤œমানের বালি, পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠছে। অন্যদিকে ওইসব অভিযোগ তোয়াক্কা না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইভান এন্টারপ্রাইজ তাদের ইচ্ছামতো কাজ করে চলেছে। নেই কোনো তদারকি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো টেকনিক্যাল কর্মকর্তা। যেন পুকুরের পানি দিয়ে সাগর ভর্তি করার ন্যায়।
প্রাক্কলণ বহির্ভূতভাবে ফাইলিংয়ের পরিবর্তে শুধুমাত্র বেস ঢালাই করেই দাঁড় করা হয়েছে মডেল মসজিদের মূল স্ট্রাকচার। পানিতে ডোবে থাকা ঝং ধরা রড, মাটি মিশ্রিত বালি ও পাথরের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে নির্মাণ কাজে। কলামের রডগুলোকে সঠিক ভাবে সোজা করা হচ্ছে না, সঠিকভাবে বাঁধা হচ্ছেনা রড ও দেয়া হচ্ছেনা পকেট রিং।
গত বুধবার ২৬মে সকালে নির্মাণ কাজের সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওইসব অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র। সাইটে তিন চারজন রাজমিস্ত্রীকে কাজ করতে দেখা যায়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি ওইসময়। কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রী হোসেন মিয়ার নিকট কলামে পকেট রিং না দেয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ঠিকাদারের লোকজনই পকেট রিং না দেয়ার কথা বলেছে।
আমরা কাজ করতে এসেছি, তারা যেভাবে বলে আমরা সেভাবেই করি। আরেক মিস্ত্রী রহমত আলী বলেন, ভাই আমরা কি করবো ? এই কাজের সাব-কন্ট্রাক্টর আমাদেরকে এভাবে কাজ করতে বলেছে। সাব-কন্ট্রাক্টরটি কে ? জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা তো তাকে চিনি না।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মুক্তাদির হোসনকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে তিনি সাথে সাথে এলজিইডি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলীকে সরজমিনে পাঠান।
কলামের রড সঠিকভাবে সোজা না করা, পকেট রিং না দেয়া এবং কলামের বেসড সঠিক মাপে না হলে ভবনের কি হতে পারে জানতে চাইলে শাল্লা এলজিইডি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ নূরুজ্জামান বলেন, ভবন নির্মাণের পর ভূমিকম্প হলে ভবন ধ্বসে যেতে পারে।
মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পর্কে শান্তিপুর গ্রামের ইয়াছিন মিয়া, সুলতানপুর গ্রামের লাল মিয়া, কান্দিগাঁও গ্রামের আব্দুল মন্নান ও শাল্লা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, উক্ত মসজিদের কাজে ঠিকাদার পুকুর চুরি করছে। নি¤œমানের কাজ করায় আমরা বার বার প্রতিবাদ করা হলেও তারা আমাদের কথার কোনো তোয়াক্কা করছে না। উক্ত কাজের তদারকির কোনো লোককে আমরা আজ পর্যন্ত দেখিনি।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ গণপুর্ত বিভাগের জেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, কালই আমি দেখছি।
Leave a Reply