নীলফামারীর সবজী বাজারে
কৃষকেরা দিশেহারা ক্রেতারা খুশি
নুরল আমিন বিশেষ প্রতিনিধি : হটাৎ করে সবজির দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা আর খুশি হয়েছে ক্রেতারা । নীলফামারীতে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকার সবজী বাজারে নিয়ে এসে ন্যায্যমুল্য না পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষকেরা। মুলা১ টাকা কেজি, ফুলকপি ৫ টাকা কেজি বিক্রয় হচ্ছে, আরতদারের কমিশন কেটে তাদের হাতে যা আসছে, তা ভ্যানভারা দিতেই শেষ। এ কারণে অনেক কৃষক গরুর খাবার হিসেবে জোগান দিচ্ছে। যেটুকু সবজী স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে, সেটিও আবার কম দাম হওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। নীলফামারীর পাইকারেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরজানায়, জেলায় এবার শীত মৌসুমে আঠার শত হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজীর চাষ হয়েছে। যেখানে মোট উৎপাদন হবে প্রায় সাড়ে পঁচিশ হাজার মেট্রিকটন। উৎপাদিত সবজীর মধ্যে ফুলকপি, বাঁধা কপি, মুলা, লাউ, বেগুন,কাচা মরিচ,গাজর, শিম সহ প্রভৃতি। এসব সবজী জেলার স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। পর্যাপ্ত পরিমানে অন্যান্য জেলায় সবজী সরবরাহ না হওয়ায় ও দাম কম হওয়ায় কৃষকেরা সবজী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে তা দিয়ে উৎপাদিত ফসলের খরচের অর্ধেক মুল্যেও উঠে আসবে না বলে জানান,সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের মোকলেছুর রহমান।
শনিবার সদরের শাখামাছা হাটে গিয়ে দেখা যায়- বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কেজি দরে। আর মুলা বিক্রি হচ্ছে ১ টাকা কেজি দরে। প্রতি পিচ লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা দরে। ব্যবসায়ী কলিম মিয়া, মধু চন্দ্র রায় বলেন,আমরা এই দরে বিক্রি করছি, তবে কৃষকেরা তো আরো কম দরে আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে যা লাভ করার কিছুদিন আলুতে করেছে,এখন আলু ১০টাকা কেজি এসব সবজি চাষ করে কৃষকরা লোকসান ছারা লাভের মুখ দেখতে পারবেনা। শাখামাছা হাটের কিচেন মার্কেটের ভাই ভাই আরতের রানা ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে এরকম পরিস্থিতি, তবে আজকে আরতে কপি ও বেগুন ৫ টাকা চলছে কেজি, মুলা ২ টাকা, নতুন আলু টাকা, পুরাতন ১০ টাকা। এব্যাপারে বাজার করতে আসা ক্রেতা ভঞ্জন কুন্ডু বলেন, এবার যে ভাবে সবজির দাম বেড়েছে এবং তা মধ্যেবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ছিলো, এখন ঠিক আছে।
জলঢাকা উপজেলার কাঠালি ইউনিয়নের কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন- এবার সবজী চাষ করে মাথায় হাত দিয়েছি, ৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি,মুলা লাগাই সেখানে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, আর বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকা। লোকসান গুনতে হয়েছে তিন বিঘায় পনের হাজার টাকা। বীজ, শ্রমিক, সার, কীটনাশক, হাল চাষ এসব ধারদেনা করে করেছি এখন ধারদেনা কিভাবে মিটাবো, পরিবার নিয়ে কি খাবো বুঝে উঠতে পারছিনা।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন- এবার আবহাওয়া ভালো হওয়ায় সবজীর চাষ ভালো হয়েছে। আগাম চাষীরা দাম পেয়েছে কিন্তু এখন কৃষকেরা দাম পাচ্ছে না।
Leave a Reply