জাকির হোসেন সিলেট ব্যুরোঃ
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার চেলা নদী ও মরা চেলা নদীর বালুমহালে শ্রমিক ও নৌ পুলিশের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নানা তথ্য বিভ্রাটসহ জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ নিরীহদের আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
ছাতক পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষে শনিবার (১০ জুলাই) সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে ইমজা’র সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে ছাতক পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, নৌ পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে, তারাই আবার অভিযোগটি তদন্ত করছে। এতে নিরপক্ষেতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বাদীপক্ষকে দিয়ে মামলা তদন্ত না করে পিবিআই কিংবা অন্য কোনো নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে মামলার তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাতক পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক চান মিয়া চৌধুরী উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও একটি চাঁদাবাজ চক্রের মদদে ছাতক পৌরসভায় একাধিকবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক তাপস চৌধুরীসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী ও নিরীহদের আসামি করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ছাতক শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের সিংচাপইড় গ্রামের মিজান নামের এক যুবককে আসামি করা হয়েছে। পেশায় তিনি একজন চালক। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে, যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৪ জুলাই চেলা নদী বালু মহালের সৈদাবাদ এলাকায় নৌকা শ্রমিক ও নৌ পুলিশের মধ্যে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে।
ছাতক নৌ পুলিশের পক্ষে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করে ছাতক থানায় মামলা করা হয়। মামলায় ঘটনাস্থল সৈদাবাদের পরিবর্তে নিয়ামতপুর উল্লেখ করা হয়েছে।
রাত ৮টায় ঘটনা ঘটলেও সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট উল্লেখ করা হয়। ছাতকের সুরমা নদীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজির বিষয়টি সর্বজনবিদিত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, চাঁদাবাজির সাথে ছাতক নৌ পুলিশের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
চাঁদবাজির বিরুদ্ধে নৌ পুলিশের যতটুকু সক্রিয় থাকার কথা, সেক্ষেত্রে তারা নির্বিকার। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীসহ তার সমর্থক, এলাকার রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীরা সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন।
ওই ঘটনা ও মামলার পেছনে গত পৌরসভা নির্বাচনে তাপস চৌধুরীর বিরোধীতাকারী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রের ভূমিকা রয়েছে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব করা হচ্ছে।
নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে মামলাটি তদন্ত করে আসল সত্য বের করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি কমিটির সদস্য বাবুল রায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ছাতক উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ আহমদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আশিক আলী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাদাত মোহাম্মদ লাহিন, আনিসুর রহমান চৌধুরী সুমন, উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগম, ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল আহমদ, মিনহাজুর রহমান তাপস, ইশতিয়াক তানভীর, আলমগীর আলম, কামাল উদ্দিন, সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
Leave a Reply