মির্জা সাইদুল ইসলাম (সাঈদ)
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক বিজয়ের বাণী।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে ২১০শতাংশ জমি লিজ নিয়ে জান্নাতুল লেমন গার্ডেন নামে একটি কৃষি প্রকল্প(লেবু বাগান)গড়ে তোলেন ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল বাছেদ ওরফে বাচ্চু মিয়ার ছেলে প্রান্তিক কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ মোফাজ্জল হোসেন। দেড় হাজার লেবুর চারা রোপন করে দীর্ঘ চার বছর পরিচর্যার পর মাত্রই ফলন শুরু হয়েছে। তিনিও বাগানটি নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। ১৫০টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত লিজনামা দলিলে উল্লেখিত মেয়াদ, ৫বছর পূর্তি শেষে উভয় পক্ষ আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী মেয়াদ পরিবর্তন,পরিবর্ধন করা যাবে উল্লেখ থাকলেও এখন বেঁকে বসেছেন লিজ দাতাগণ।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশী বৈঠকের পর দুটি দলিলে ১১০শতাংশ পুনরায় পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করে দিলেও বাকি ১০০শতাংশ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিরোধ এবং বিরোধের জের ধরে গত কয়েক দিন আগে ওই জমির লিজ দাতা উপজেলার কচুয়া গ্রামের মৃত দেওয়ান দুলাল উদ্দিনের পাঁচ ছেলেঃ-(১)দেওয়ান মোজাম্মেল হক (২)দেওয়ান সুজাত আলী(৩) দেওয়ান আব্দুল জব্বার(৪) দেওয়ান হযরত আলী (৫)দেওয়ান শওকত আলী গংরা আমার স্বপ্নে গড়া লেবু বাগানের উপর হামলা চালিয়ে আমার “জান্নাতুল লেমন গার্ডেন” এর সাইনবোর্ডটি ভেঙে ফেলে এবং সেখানে “দেওয়ান লেমন গার্ডেন” নামে একটি নতুন সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে জোরপূর্বক দখলে নেয়। তারপর থেকে আমি ওই লেবু বাগানে গেলে আমাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি প্রদান করে। যার ফলে নিরুপায় হয়ে আমার স্বপ্নের লেবু বাগানটি রক্ষা করার জন্য ও আমার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ও ১০৭/১১৭(গ) ধারায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছি।
উল্লেখ্য:-ভুক্তভোগী ওই প্রান্তিক কৃষি উদ্যোক্তা তার এমন ভোগান্তির বিষয়টি কৃষি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবগত করণ ও প্রতিকার পাওয়ার লক্ষ্যে শনিবার (১১সেপ্টেম্বর) বিকেলে সখিপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন ২১০শতাংশ জমিতে আমার দেড় হাজার লেবু গাছ রয়েছে যার প্রতিটি গাছের পেছনে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমার ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। সর্বমোট খরচ দাঁড়ায় ত্রিশ লক্ষ টাকা, এছাড়া ৫০ হাজার কলম দেয়া হয়েছে যার মূল্য প্রায় ছয়লক্ষ টাকা।লিজ নামা দলিলের ৭ ও ৮ নং কলামে উল্লেখিত রয়েছে মেয়াদ সংক্রান্ত পরিবর্তন পরিবর্তনের বিষয়টি। যেহেতু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কৃষিজাত প্রকল্প, চারা রোপণের পর প্রায় ৩-৪ বছর লেগে যায় ফলন শুরু হতেই। অতএব এই অবস্থায় যদি আমার এই প্রকল্পটি বেহাত হয়ে যায় তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না, কারণ আমার উপার্জিত সমস্ত অর্থসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-দেনা করে ভবিষ্যতের আশায় এই প্রকল্পটি দাঁড় করাতে খরচ করতে হয়েছে । যদি এখন আমাকে অর্থ ও পেশী শক্তির জোরে বেআইনিভাবে এখান থেকে উচ্ছেদ করা হয় তাহলে আমি একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যাবো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, আমাকে জমিটি লিজ দেয়ার সময় দলিলে উল্লেখিত এসএ ও বিএস দাগ গুলোও সঠিক নয় শুধু তাই নয় ওই দাগের ৮ একর জমিই বন বিভাগের। আমি লেখাপড়া শিখিনি বলে দাতাগণ কৌশলে আমার সঙ্গে এই প্রতারণা করেছে যার ফলে যেকোনো সময় বন বিভাগের দাঁড়াও আমি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনায় রয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সখিপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম হাবিব, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বাবুল সহ অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মী বৃন্দ।
Leave a Reply