জাকির হোসেন সুমন সিলেট ব্যুরোঃ
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। প্রাপ্তি অনেক। করোনাকালে মাঠচষে মানবতার কল্যানে ও কাজ করেছেন।গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে শৃংখলার আলোয় আলকিত করতে চাওয়া মানুষটি নিজের মাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখলেন। তাঁর এ লেখা সমাজিক মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করবে। সামাজিক দায়িত্ব থেকে দৈনিক ভোরের ধ্বনি পত্রিকায় আবেগঘন লিখুনির সমৃদ্ধ বাক্যগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো দৈনিক ভোরের ধ্বনি পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারের মায়ের ও পরিবারের সকলে সুস্বাস্থ্য দীর্ঘ হায়াত কামনা করি।
আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাদেরকে বড় করেছেন। সারাজীবন সংসার, ছেলে-মেয়ে এবং নিকটাত্মীয়দের জন্য অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষা ও কষ্ট করেছেন। অভাবের এই সংসারটাকে গুছিয়ে রাখা এবং আমাদের বড় হওয়ার পিছনে মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি।
বাবাকে হারিয়েছি অনেক বছর আগেই। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো আজকে অনেক বেশি খুশি হতেন আমাদেরকে দেখে। আল্লাহ তুমি আমার বাবাকে জান্নাত দান কর।
২০১৪ সালে মা প্রথম স্ট্রোক করেন। তারপর আরো কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হন ।যতবারই অসুস্থ হয়েছেন, নিজের সর্বোচ্চটা বিলিয়ে দিয়ে মায়ের চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। সর্বশেষ গত মাসের ৩০ তারিখ তিনি স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হন। ডাক্তার বললেন, দ্রুত আইসিইউর ব্যবস্থা করতে হবে।
আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে করে মাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের ভর্তি করি। নিবিড় পরিচর্যায় হাসপাতালে ১৬ দিন অতিবাহিত করেন। তারপর থেকে মাকে নিয়ে বাসায় আছি। উনার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত হাঁটাচলা করতে পারছেন না। শরীরের একপাশ এখনো প্যারালাইজড। আশা করছি মা আবার হাঁটাচলা করতে পারবেন।
আমার মা সৌভাগ্যবানদের মধ্যে একজন কারণ তিনি তার ছেলের বউদের কাছেই সবচাইতে বেশি যত্ন পেয়ে থাকেন। আমার দুইবোন মায়ের অসুস্থতার সময় প্রায়ই কাছে থাকেন সাধ্যমত সেবা করার চেষ্টা করেন তবে।
আমার খোকন ভাই ও তাঁর স্ত্রী দীর্ঘ সময় ধরে আমার মায়ের সেবা করেছেন। বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার দুলাভাই আবুল কালামের প্রতি যিনি সব সময়ই মায়ের অসুস্থতার খবরে দৌড়ে আসেন।
সবিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার প্রিয় সহধর্মিনী মাহফুজা শারমিনের প্রতি।
আমার ব্যস্ততার কারণে আমি অনেক সময় মাকে ভালো করে দেখা শুনা করতে না পারলেও তার পুরোটাই মাহফুজা শারমিন পুষিয়ে দিয়ে চলেছেন।তার নিবিড় তত্ত্বাবধান প্রশংসার দাবিদার। নিজের মায়ের মতো করেই খুব যত্ন সহকারে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমার মায়ের যত্ন নেন। আমার মেয়েদেরকেও তিনি শেখান -কিভাবে মুরুব্বীদের যত্ন নিতে হয়, আদর করতে হয়।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা ডাক্তার মোঃ রাশেদুন্নবী, নিউরোলজি বিভাগ প্রধান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল- কে যার তত্ত্বাবধানে মা হাসপাতালে ছিলেন এবং তিনি এখনো মাঝে মাঝে বাসায় এসে মাকে ফলোআপ চেকআপ করে যাচ্ছেন।
মায়ের অসুস্থতার খবর জেনে অনেকেই বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন তাদের প্রতি রইল অশেষ কৃতজ্ঞতা। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন -আমরা মায়ের আরো বেশি যত্ন নিতে পারি এবং তিনি যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
Leave a Reply