আসিফ জাহান
বিশেষ প্রতিনিধি কুলাউড়া
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের বেশ কিছু ঘরে নির্মাণের দু’মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবারের ঝোড়ো বাতাসে এসব বাড়ি-ঘরে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এতে এসব ঘরে থাকা সুবিধাভোগী নিম্নবিত্ত মানুষগুলো আছেন আতঙ্কে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘরগুলো দ্রুতই মেরামত করা হবে।
মাত্র দু’মাস আগে সরকারের আশ্রয় প্রকল্পের ঘর বুঝে পান জেলার ভূমিহীনরা। পাকা ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হলেও গত শুক্রবার রাতের সামান্য ঝোড়ো বাতাসের কবলে পড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ও মেঝে ফেটে যায়। ফলে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলো এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ১২নং পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডে( গনকিয়া ) গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রথম দফায় গড়ে ওঠা ১৯টি ঘরের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে এমন ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। ঘর পাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, প্রথম দফায় প্রতিটি ঘরের জন্য এক লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় ধরে বজ্রমতলি (গনকিয়া) গ্রামে ১৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়। আর এসব ঘর ভূমিহীনদের মাঝে বুঝে দেওয়া হয় গত ফেব্রুয়ারিতে।স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেকটাই তড়িঘড়ি করে ঘরগুলো নির্মাণ ও মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার না করার কারণেই সামান্য দুর্যোগে ঘরের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব ফাটল ধরা ঘর বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছেন অনেকে। অন্যদিকে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
সরকারের ঘর পাওয়া আব্দুল হাসিম, রাবেয়া খাতুন,জবেদ সহ অনেকে জানান, সামান্য বাতাসে বেশ কয়েকটি ঘরে ফাটল ধরেছে, তার কারণ ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে এসব ফাটল ধরা ঘরে থাকতে ভয় লাগছে। অনেকে ঘর ছেড়ে বাইরে থাকছে। আমরা ভূমিহীন গরিব মানুষ বলেই ঘর পেয়েছিলাম। কিন্তু, এমন ঘর পেলাম যে ঘরে থাকা এখন ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে আমাদেরকে ভাল মানের ঘর তৈরি করে দেওয়া হোক। আর যারা ঘর নির্মাণে অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।
ঘরগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে স্বীকার করে ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার শাহিন মিয়া জানান, সবকিছুই নির্বাহী অফিসার করেছেন। ঘরগুলো যদি টেকসই না হয় তাহলে তো ব্যর্থতাই বলা যায়।
Leave a Reply