মির্জা সাইদুল ইসলাম (সাঈদ)
স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক বিজয়ের বাণী:
মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার খ্যাত টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৫০তম টাঙ্গাইল পাকহানাদার মুক্ত দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে “বিজয় ৭১” সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭১সালের এইদিনে টাঙ্গাইলকে পাকহানাদার মুক্ত ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের গড়া কাদেরিয়া বাহিনী।
১১ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলার বহেড়াতৈল গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের শপথ স্তম্ভে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এরপর বহেড়াতৈল গণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে টাঙ্গাইল আঞ্চলিক উন্নয়ন কমিটির ব্যবস্থাপনায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম ও ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এবং সখিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চিত্রা শিকারী’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড.মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, টাঙ্গাইল জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল ৮ বাসাইল সখিপুরের মাননীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড.জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব মো: আবুল কালাম আজাদ।
কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে টাঙ্গাইলের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই দিনে আমরা টাঙ্গাইলকে হানাদারদের দখল থেকে মুক্ত করি। স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও দেশে স্বাধীনতাবিরােধী শক্তি ও ধর্মান্ধরা সক্রিয় রয়েছে। তারা দেশবিরােধী নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। দেশের সুনামহানি ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা নানা ভাবে পায়তারা চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ধর্মান্ধরা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের মানুষকে বার বার আন্দোলন করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। পাকিস্তান আমলে বার বার গণতন্ত্রের উপর আঘাত এসেছে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পথ পেরিয়েই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের সবাইকে সােচ্চার থাকতে হবে। ধর্মান্ধ ও স্বাধীনতাবিরােধী শক্তি যেন আর কোন দিন ক্ষমতায় আসতে না পারে- এ বিষয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
সাবেক সচিব ও টাঙ্গাইল আঞ্চলিক উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ড.খোন্দকার শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব হুমায়ন খালিদ, স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মনছুরুল আলম (হীরা), ব্যুরো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন, স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সখিপুরের কৃতিসন্তান মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও “বিজয় ৭১সমাবেশ” উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব দেওয়ান মাহবুবুর রহমান (বাদল), মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা করেন সখিপুর পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ, সখিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ও গনি।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল (লেবু) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আতাউল মাহমুদ, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক তিন বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শওকত শিকদার, প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান শেলী, ঢাকাস্থ সখীপুর উপজেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও সাস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার শেষে অনুষ্ঠিত হয়
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত ও বরেণ্য অতিথিদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ একে সাইদুল হক ভূঁইয়ার বিচক্ষণতা এবং তৎপর ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়।
Leave a Reply