সোহেল মিয়া,দোয়ারাবাজার থেকেঃ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নিরীহ ২টি পরিবারের বাড়িঘরে হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ উটেছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের জুয়াইর গাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিরীহ ২ টি পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নারীসহ অন্তত ৫ জনকে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের জুয়াইর গাঁও গ্রামের আঃ আজিজ ও তার ভাই আরব আলীর পরিবারের সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিলো প্রতিবেশি মৃত আঃ মুতলিব এর পুত্র আমির আলী (৫০) সাথে। এরই জের ধরে সোমবার সকালে আমির আলীর নেতৃত্বে লোকজন আজিজ ও তার দুই আত্মীয়র বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভেংঙ্গে এলোপাথাড়ি বেধড়ক মারপিট করে।
এর মাস খানেক আগে ৪৫ শতাংশ জমির পাঁকা ধান ও ২ জানুয়ারি রবিবার বাড়ি থেকে গাছ কেটে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এই ঘটনায় প্রতিপক্ষের দায়ের কুপে গুরুতর আহত আরব আলী’র পুত্র খলিল ও তার স্ত্রী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এই হামলার ঘটনায় অন্য আহতরা হলেন,
আলামিনের স্ত্রী জোসনা বেগম ( ২২), মৃত আঃ আজিজের পুত্র বিল্লাল হোসেন (৩৬), আরব আলী’র পুত্র হাবিব (২১) গোলাম আলী’র পুত্র দিলোয়ার(২৬)।
ক্ষতিগ্রস্ত নারী জোসনা বেগম বলেন, সোমবার সকালে আমরা বসত ঘরের ভিতরে অবস্থান কালে হঠাৎ আমির আলী তার লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় লাঠি সুলফি এবং ইট পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। ঘরের দরজা ও টিনের বেড়া ভেঙে তারা আক্রমন করে। ভয়ে আমরা চৌকাঠের ভেতর লুকিয়ে ছিলাম। তার পরেও তারা আমাদের উপর মারধর আক্রমন করে।
ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আরেক নারী মৃত আঃ আজিজের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৫৫) বলেন, আমার তখন ঘুম থেকে উঠার সময় হঠাৎ দেখি আমির আলী তার লোকজন নিয়ে ঘর ভাঙচুর করতে থাকে এবং এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। এতে বাধা দিলে আমাদেরকে ও মারধর করে আহত করে।
আহত খলিল মিয়া জানান, তারা মাস দেড়েক আগে জুর পূর্বক জমির ধান কেটে নিয়ে যায়, এ নিয়ে কয়েকদিন আগে একটি মামলা ও করা হয়েছে । দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল শামিম ও এলাকার মুরুব্বীরা আমির আলী’র কাছে গেলেও তারা কোন সুরাহা পাননি। গতকাল জরুরী কাজে আমাদের পরিবারের সবাই উপজেলা সদরে যায়, এই সুযোগে প্রতিপক্ষ লোকজন গাছ পালা কেটে নেয়। এর একদিন পার না হতেই তারা ভোর সকালে আমাদের বাড়ি ঘরের উপর হামলা চালায়। এতে বাধা দিলে আমাদেরকে ও মারধর করে।
ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল শামিম বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের নিষ্পত্তি করার জন্য সামাজিক ভাবে কয়েক বার চেষ্টা করা হলেও দু’পক্ষকে একসাথে করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া আহত খলিল মিয়া ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করে আসছিলো। কিন্তু তা না হবার আগেই একটা পক্ষ অন্যায়ভাবে খলিল ও তার পরিবারের উপর এভাবে হামলা চালিয়ে মারধর, ভাঙচুর ও বাড়িঘর তছনছ করে। আমি দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাই।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রনে আছে। ঘটনার পর থেকে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুযায়ী আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply