ভোলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইউপিসচিবের মারধর, আতঙ্কিত শিক্ষার্থী
ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর ও অর্কত্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। রবিবার (১০ জানুয়ারী) বিকালে ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজারের নাজিউর রহমান কলেজের পেছনে মীর বাড়ী সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইউপি সচিব কর্তৃক মারধরের শিকার এসএসসি শিক্ষার্থী সোহাগ বর্তমানে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর পরিবার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও স্যারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ সোহাগ প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়ে বাড়ী ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠি বন্ধু মিতুলের সাথে কথা বলছিলো। এসময় ওই পথ দিয়ে দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেন আরও একজন লোকসহ যাচ্ছিলো। শিক্ষার্থী মিতুল সহপাঠি মোঃ সোহাগকে সাইড দিতে বলে। সোহাগ সচিব আলমগীরকে সাইড দেয়। সচিব আলমগীর ও তার সাথে থাকা লোক কিছু দূর চলে যায়। সোহাগ তার সহপাঠি বন্ধু মিতুলের উদ্দেশ্যে বলে মানুষই তো যাইতেছে, গাড়িতো আর যাইতেছে না যে মাইরা দিয়া চলে যাবে। ভয়ের কি আছে। দুই বন্ধুর সাথে চলা এই কথা দুর থেকে শুনতে পেয়ে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন উত্তেজিত হয়ে তেঁড়ে এসে এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধর করে। সচিব আলমগীর উত্তেজিত মেজাজে বলে তোর বাড়ি কোথায়, বাপের নাম কি, তোর বাপেরে বাড়ি থেকে এনে তোকে ও বাপকে পিঠাবো। আমাকে চিনিস? এসময় শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল সচিব আলমগীর হোসেনকে উদ্দেশ্যে করে বলে আপনাকে তো কিছু বলি নাই। আপনি কেনো এমন করছেন। আলমগীর হোসেন আরও উত্তেজিত হয়ে সোহাগকে অর্কত্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একজন ইউপি সচিবের এমন আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী মোঃ সোহাগের বড় ভাই এম শাহরিয়ার জিলন বলেন, দুই বন্ধুর কথোপকথনকে কেন্দ্র করে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন আমার ভাই সোহাগকে মারধর ও অশোভন আচরণের ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। একজন ইউপি সচিবের কাছ থেকে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আশা করিনি। আমার ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগ এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আমি এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও স্যারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখছিলো। তারা দুজন কথা বলছিলো, আমি ডাক দিলে কথা না শুনায় সোহাগকে থাপ্পর দিয়েছি।
বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এডভোকেট সাহাদাত হোসেন শাহিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তুচ্ছ কারণে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একজন সরকারী চাকুরীজীবি ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কেউ আশা করে না। প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেনের আগেও একাধিক লোকের সাথে এমন অশোভন আচরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
Leave a Reply