1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কয়রায় হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও পুরুষের অর্ধেক মজুরি পান মুন্ডা নারীরা - dainikbijoyerbani.com
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন
ad

আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কয়রায় হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও পুরুষের অর্ধেক মজুরি পান মুন্ডা নারীরা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৭৯ Time View

মোহাঃ ফরহাদ হোসেন,কয়রা(খুলনা) প্রতিনিধিঃ

এখন ধান কাটার কাজে ব্যস্ত মুন্ডা নারী শ্রমিকেরা। এ কাজের জন্য প্রতিদিন পুরুষের অর্ধেক টাকা মজুরি পান । তার পরেও অভাব অনটনের জন্য বৈষম্যর শিকার হয়েও হাড়ভাঙ্গা প্ররিশ্রম করে পুরুষের অর্ধেক মজুরী পেয়েও সংসার চালানোর কাজ করে যাচ্ছেন কয়রার আদিবাসী মুন্ডা নারী সদস্যরা। কাকডাকা ভোরে শুরু হয় উষা রানী মুন্ডার (৩৫) দিন। সকালে রান্না করে খেয়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অন্য নারীদের সঙ্গে ধান কাটতে বিলে যান। দুপুরে এসে পরিবারের সদস্যদের জন্য রান্না করেন। এরপর খেয়ে বিলে কাজে ছোটেন আবার। এভাবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন ময়না মুন্ডা সহ খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের ৬নং কয়রা গ্রামের মুন্ডা সম্প্রদায়ের নারী দিনমজুরেরা। মাঠে পুরুষের সমান কাজ করেও মজুরি পান কম। নারীরা যে কাজে দিনে মজুরি পান ২০০ টাকা, সেই একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকেরা পান ৪০০ টাকা করে। সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা নারী সংস্থার সভানেত্রী সাধনা মুন্ডা বলেন, বর্তমানে কয়রায় মুন্ডা নারী শ্রমিক আছেন ২৭৯ জন। তাঁরা যেমন পরিশ্রমী, তেমনি সময়নিষ্ঠ। সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরা থেকে শুরু করে মাঠে শস্যবীজ রোপণ, ধান লাগানো ,ধান কাটা, ক্ষেতের বিভিন্ন তরিতরকারী লাগানো কাজে পুরুষের চেয়ে এসব নারী বেশি শ্রম দেন। এরপরও মজুরি পান পুরুষের অর্ধেক। উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার বলেন, ‘নারীরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করলেও পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছেন না, এটা খুবই দুঃখজনক। আমি মনে করি, নারী শ্রমিকদেরও সমান মজুরি দেওয়া উচিত।’ নলপাড়া গ্রামের সন্ধ্যারানী মুন্ডার এক ছেলে ও এক মেয়ে। সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী। এ জন্য তিনিও কাজে নামেন। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই নারীর সাথে গতকাল রবিবার সকালে সরেজমিন গেলে তিনি বলেন, সারা দিন অন্যের জমিতে কাজ করেন এবং কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সংসারের সব কজও করতে হয়। এ জন্য এক বেলা খাবার ও ২৫০ টাকা মজুরি দেন গৃহস্থ। মাঠে পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে সমানভাবে কাজ করেও সমান মজুরি পান না। দীর্ঘদিন ধরে জমিতে ধান রোপণ, পাকা ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে আসছেন, ৬ নম্বর কয়রা গ্রামের মুন্ডাপাড়ার নারী শ্রমিক বাসন্তী মুন্ডা। তিনি বলেন, ঝড়, বৃষ্টি, শীত উপেক্ষা করে অনেক কষ্ট করে জমিতে কাজ করেন। সে তুলনায় মজুরি পান কম। বর্তমানে অন্যর মৎস্য ঘেরে প্রচন্ড রৌদ উপেক্ষা করে শ্রমিকের কাজ করলেও মজুরী পান পুরুষের তুলনায় অনেক কম। কয়রার বড়বাড়ি গ্রমের সরলা মুন্ডা, সুনীতি মুন্ডা, মাঝেরপাড়া গ্রমের অঞ্জলি মুন্ডা, রাধারানী মুন্ডা, বতুল বাজার এলাকার ফুলঝুরি মুন্ডা, বেদকাশির শিউলি মুন্ডা সহ কয়রার বিভিন্ন এলাকার আদিবাসী নারী শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, বোরো-আমন মৌসুমে চারা রোপণ, ধান কাটাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসলের পরিচর্যা, মাটি কাটা, চাতাল–ইটভাটার কাজ এবং রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন তাঁরা। এসব শ্রমিকেরা বলেন, কেবল অভাবের তাড়নায় কম মজুরি পেয়েও মাঠে-ঘাটে পুরুষ শ্রমিকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করেন তারা। বৈষম্য থেকে পরিত্রানের দাবি জানিয়েছে মুন্ডা নারীরা। কয়রা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসিমা আলম বলেন, অনেক আগে থেকেই কয়রায় নারী ও পুরুষ শ্রমিকের মধ্যে শ্রমের মজুরি বৈষম্য চলছে। নারীরা যে শ্রম দেন, টাকার অঙ্কে হিসাব করলে সেটা পুরুষের চেয়ে বেশি হওয়ার কথা। আসলে এ অঞ্চলে নারী শ্রমিকদের সব সময় উপেক্ষিত রাখা হয়েছে। সামাজিক সচেতনতাই এই বৈষম্য দূর করতে পারে।

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি