আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো চরমোনাই’র বাৎসরিক মাহফিল
বরিশালঃ বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত চরমোনাইর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামেয়া রশিদিয়া আহসানাবাদ মাদরাসার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ফাল্গুনের বাৎসরিক মাহফিল।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর হেদায়েতি বয়ানের পর ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের বিশাল গণ জমায়েতে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাই পীর সাহেব মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
তিনি আখেরি মোনাজাতে দেশ, মানবতা, ইসলাম ও দেশের মানুষের শান্তি ও কল্যাণের জন্য দোয়া করেন চরমোনাই পীর সাহেব। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামবিরোধী, মানবতাবিরোধী অপশক্তির হেদায়াতের জন্যও দোয়া করেন। তারপর মুমিন মুসলমানদের ঐক্যের আহ্বানেরও দোয়া করা হয়। এ সময় পুরো মাঠ জুড়ে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়।
গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাদ জোহর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে বার্ষিক মাহফিল শুরু হয়। তিনদিন ব্যাপী মাহফিলে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ৫টি বয়ান পেশ করেন এবং নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ২টি বয়ান পেশ করেন।
আখেরি মোনাজাতের আগে চরমোনাই পীর সাহেব হেদায়েতি বয়ানে বলেন, মানুষ যখন আল্লাহকে ভুলে যায়, তখন মানুষের মধ্যে মানবতা থাকে না; বিধায় তারা যে কোনো অপরাধে জড়িয়ে যায়। এজন্য আমাদের সবার মধ্যে আল্লাহর ভয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পূর্ণ আনুগত্য থাকতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মনোনীত দ্বীন ছাড়া অন্য কোনো তন্ত্রমন্ত্র কখনোই গ্রহণ করা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন পীর সাহেব চরমোনাই।চরমোনাই পীর আরও বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদর্শ ছাড়া অন্য আদর্শ গ্রহণ করে কিংবা অন্য আদর্শের দিকে লোকদের আহ্বান করে, নিশ্চয়ই তারা পথভ্রষ্ট।
মাহফিলে হাসপাতালসহ সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেন মাহফিল কতৃপক্ষ। চলতি বছরে চরমোনাই’র ৩০০ একর অর্থাৎ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় ৫টি মাঠজুড়ে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এতে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় এক কোটি লোক অংশগ্রহণ করেছেন। তারপরেও লোক সংকুলান হচ্ছে আগত মুসল্লিগণ জায়গা না পেয়ে আশেপাশে বাড়ির আঙ্গিনায় ও জঙ্গল ঝোপঝাড়ে তাবু গেড়ে অবস্থান নিচ্ছেন। মোনাজাত শেষে আগত মুসুল্লিরা শত শত বাস, লঞ্চ, ট্রলার, স্পীড বোড সহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। নদীর বিস্তৃর্ণ এলাকা, মাঠের আশপাশের বাগান, ঘড়বাড়ির আঙিনাসহ সবখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লিদের উপস্থিতিতে তিল ধারণে ঠাঁই ছিলোনা। মাহফিলে উদ্ধোধনী বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাইর হাতে হাত রেখে ৭ জন হিন্দু কালেমা পরে মুসলমান হয়েছেন। মাহফিলে আগত মুসুল্লিদের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়। জানাজা শেষে তাদের কফিন নিজ নিজ ঠিকানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি। মাহফিলে মুজাহিদ কমিটির হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ র্যাব, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply