রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে মৃত, প্রবাসী, প্রবাসীর পরিবার ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নামে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের কার্ড বরাদ্দের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, গত ১০ আগস্ট উপজেলা খাদ্য অদিধপ্তর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা হালনাদাগ করতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশের আলোকে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের সাথে আলোচনা না করেই পুরাতন তালিকায় থাকা অস্বচ্ছল, দুস্থ, প্রতিবন্ধী সুবিধাভোগীদের নাম কর্তন করে নতুন করে তালিকা তৈরি করেন। নতুন তালিকায় চেয়ারম্যান তার নিজের আত্মীয় স্বজন ও তার অনুসারিসহ মৃত, প্রবাসী, ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভূক্ত করেন। এছাড়াও একই পরিবারে একাধিক নামও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। আবার অনেকের নামে ভিজিডি থাকা সত্তে¡ তাদেরকেও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এ অনিয়মের অভিযোগে তিন ইউপি সদস্য দেলোয়ার, তরিকুল ও নাসির গত ২৭ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্য অদিধপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের দেয়া নতুন তালিকা যাচাই-বাছাই না করেই ঐ তালিকায় প্রত্যেকের নামে কার্ড ইস্যু করে গত ২৯ সেপ্টেম্বর চাল বিতরণ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।
এখন হালনাগাদে বাদ পড়া সুবিদাভোগী পরিবার গুলো এই করোনাকালে চাল না পেয়ে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। বাদ পড়া কয়েকজন সুবিদাভোগী জানায়, নাম বাদ পড়ার কারন জানতে গেলে চেয়ারম্যানে কয় মেম্বারের কতা, মেম্বারে বয় চেয়ারম্যানের কতা। মোরা এহন কি হরমু না খাইয়া মইরা জামু ?
সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তমপুর এলাকায় প্রচীরের মধ্যে দোতলা পাকা ভবনের মালিক রুস্তুর আলী হাওলাদার গত চার বছর আগে মৃত্যুবরন করেন। তার দুই ছেলেই স্থানীয় উত্তমপুর বাজারে পার্স ও সেনিটারীর ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু মৃত ব্যক্তির নামে চেয়ারম্যান ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড বরাদ্দ দিলেও ঐ পরিবারটি জানেনা। নতুন তালিকায় তার সিরিয়াল নম্বর ৬৫৮।
প্রবাসী শাওন এর নামেও নতুন তালিকায় নাম রয়েছে। তালিকায় সিরিয়াল নম্বর ৬১৪। বর্তমানে তার বাবা খুলনা ও মা বরিশালে বসবাস করে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন শুরু মিয়া জানান, আমার ইউপিতে আগে সুষ্ঠ কোন বন্টন ছিল না। সুষ্ঠ বন্টন করায় কিছু সুবিধাভোগীর নাম বাদ পড়েছে। তড়িগড়ি করে নতুন তালিকা প্রস্তুত করায় মৃত, প্রবাসী, স্বচ্ছল পরিবারের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। কয়েকটি সংশোধন করা হয়েছে। বাকি গুলোও খুঁজে বের করে সংশোধন করা হবে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, মেম্বার-চেয়ারম্যানদের ভাগাভাগি নিয়ে একটা জামেলা তৈরি হয়েছে সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু তালিকায় অনিয়ম হলে তা সংশোধন করা হবে। প্রতি মাসেই সংশোধন হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন বলেন, তালিকায় যদি কোন মৃত, প্রবাসী, প্রবাসীর পরিবার, স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকে তাদের নাম কে সুপারিশ করছে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply