পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি:
বরগুনার পাথরঘাটায় চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে হত্যার ১০দিন পর ঘাতক শাহিন মুন্সী(২২)কে চট্টগ্রাম থেকে সোমবার গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
গ্রেফতারের পর সিআইডি ক্রাইম ইউনিট সংবাদ সম্মেলনে জানান,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে,স্বামী শাহিন মুন্সী তার স্ত্রী-সন্তানকে নিজেই হত্যা করেন,তিনি আরো জানান, তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই বাকবিতন্ডা ঝগড়া হতো। তাই ১জুলাই রাতে তার স্ত্রী বাসার বাইরে গেলে শাহিন মুন্সীও পিছনে পিছনে গিয়ে মাছ ধরার রশি গলায় পেঁচিয়ে তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার কে হত্যা করে । স্ত্রীকে হত্যা শেষে বাসায় আাসার পরে সন্তান কান্না করলে সন্তানকেও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে সে । এরপরে খালের পাড়ে দুজনকেই মাটিচাপা দিয়ে রাখে। হত্যাকারী শাহিন মুন্সী তার সৎ বোনের বাসা খুলনায় গেলে সেখানে তার বোন তাকে রাখতে অস্বীকার করে । ওখানথেকে ছোট বোনের কাছে চট্টগ্রাম গেলে সেখানেও একই ঘটনা ঘটে। পরে তিনি চট্টগ্রাম একটি গ্যারেজে থাকা খাওয়ার শর্তে থাকেন। আর সেখান থেকেই ১২ জুলাই রাতে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি চট্টগ্রাম ব্যুরো।
এর আগে পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতেমপুর এলাকার রিপন বাদশার মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে শাহিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে সুমাইয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরলে তার বাবা শাহিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলায় শাহিন কারাভোগ করে বিয়ে করার শর্তে মুক্তি পায় এবং বিয়ে করে। এর পর থেকেই তাদের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ মীমাংসা হলেও একইভাবে কলহ চলতে থাকে তাদের মধ্যে।
গত বুধবার দুপুরে সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে তার বাবা দাওয়াত করলে সেখানে শাহিন না গেলেও স্ত্রী-সন্তান দাওয়াত খেতে যায় শাহিনকে রেখে। সুইমাইয়া দাওয়াত খেতে যাওয়ায় শাহিন খুনের পরিকল্পনা করে বলে মনে করে প্রতিবেশীরা।
ওই রাতের কোনো এক সময় স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পিছনের খালের পাড়ে গর্ত করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। পরে সুমাইয়ার পরিবার লোকজন খোঁজাখুঁজির পরে মা-মেয়েকে না পেয়ে বাবা রিপন বাদশা পাথরঘাটা থানায় জানায়। স্থানীয়রা বাড়ির পিছনে আলগা মাটি দেখে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয় পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
পাথরঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল বাশার আসামী শাহিন মুন্সী কে গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করে বলেন, পাথরঘাটা থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
Leave a Reply