1. [email protected] : দৈনিক বিজয়ের বানী : দৈনিক বিজয়ের বানী
  2. [email protected] : Hasan :
  3. [email protected] : dev : dev
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বিরামপুর, নবাবগঞ্জের আশুরার বিল - dainikbijoyerbani.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
ad

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বিরামপুর, নবাবগঞ্জের আশুরার বিল

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১১১ Time View

এস এম মাসুদ রানা বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি-

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ও নবাবগঞ্জের আশুরার বিল প্রকৃতির একটি অপার দান, সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বিলটির মোট আয়তন ৮৫৭ একরেরও বেশি, যার প্রায় ৫৯০ একর পড়েছে নবাবগঞ্জ উপজেলার মধ্যে, বাকিটা বিরামপুর উপজেলায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা আশুরার বিলকে নিয়ে রয়েছে নানান পৌরাণিক কাহিনী। কথিত কাহিনিগুলোর একটি হলো, অতি প্রাচীনকালে আধিপত্য বিস্তারে লড়াই শুরু হয় দেবতা এবং অসুরদের মধ্যে। সেই লড়াইয়ে পরাজিত হয় অসুরেরা। দেবতাদের খঞ্জরের আঘাতে অসুরদের শরীর থেকে ঝরা রক্তে ভরে গিয়েছিল তাদেরই পায়ে দেবে যাওয়া গর্ত। অসুরদের সেই কাহিনী থেকে লোকমুখের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এটির নাম হয়ে ওঠে আশুরার বিল।

শালবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আশুরার বিল হয়ে উঠেছে আরো বেশি মোহময়। উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং পর্যটন সুবিধাদির উন্নয়নের লক্ষ্যে সেই শালবনকে ২০১০ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার, যা স্থানীয়ভাবে শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান নামে পরিচিত। আগে এটি শুধু শালবন হিসেবে থাকলেও এখন সেখানে রয়েছে ২০-৩০ প্রজাতির গাছ। আর ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সমগ্র উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম বিল আশুরাতে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ। শাপলা আর পদ্মফুলের সমারোহে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতানে মায়াবী আবেদনে হাতছানি দিয়ে ডেকে যায় আশুরার বিল। ঐতিহ্যবাহী বিলটি এক সময় উত্তরাঞ্চলের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে হয়ে ওঠে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। কিন্তু অবৈধ দখলদারদের কারণে অচিরেই বিলটি হারাতে বসে তার ঐতিহ্য। স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে অপার সম্ভাবনার এই জলাশয়। বাঁশের বেড়া আর মাচা দিয়ে শত ভাগে ভাগ করে ফেলে তারা। শীতে ধান চাষ করে তাতে কীটনাশক ব্যবহার করায় হারিয়ে যেতে থাকে দেশি প্রজাতির বহু মাছ। কচুরিপানা আর বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায় জরাজীর্ণ রূপ নেয় আশুরা। সুষ্ঠু পরিকল্পনা আর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বিলটিকে কৃষি জমি হিসেবে ব্যবহার শুরু করায় এর পানি কমতে থাকে আশঙ্কাজনকভাবে। বিলের অধিকাংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে যেতে থাকে এর সৌন্দর্য। অথচ আইনগতভাবে বিলের জমির শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

একটা সময় আর চুপ করে বসে না থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে থাকা দর্শনীয় এই স্থান নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন আশুরা বিলের হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে কয়েক জন জনপ্রতিনিধির সহায়তায়। আগের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বিলের পূর্ব অংশে পানি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় একটি ক্রস ড্রাম। ফলস্বরূপ বিলটিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্ম আর শাপলা ফুটতে থাকে যেন প্রতিযোগিতা করে। বৃদ্ধি পেতে থাকে লাল খলশে, কাকিলা, ধেধলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। দীর্ঘ দুই দশক পর শীতের ঠিকানা খুঁজে নিতে আবারো আশুরায় ছুটে আসতে থাকে বালিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, শামুকখোল, হট্টিটি, সাদা মানিকজোড়, রাঙ্গামুডিসহ অন্যান্য প্রজাতির হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। বিল আর বনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য গড়ে তোলা হয় দেশের বৃহত্তম আঁকাবাঁকা কাঠের সেতু। বন আর বিলকে একই সুতোয় গেঁথে দেওয়া ইংরেজি জেড আকৃতির এই সেতুর নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা কাঠের সেতু’। আশুরার বিল আর শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে। আশুরার বিলকে কেন্দ্র করে এলাকার আর্থ-সামাজিক এবং প্রাকৃতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে স্থানীয় প্রশাসন হাতে নেয় উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ৷

ad

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ad
ad
© All rights reserved 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সীমান্ত আইটি