গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

গাজীপুরের শ্রীপুরে এ.এস.এম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (আজিজ কেমিক্যাল) নামের একটি কারখানায় দ্বিতীয় বারের মত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে গাজীপুর, শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। প্রায় ৫ ঘন্টা চেষ্টা করে রাত ১১.৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আগুনে কারখানার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, প্লান্টে থাকা মেশিনপত্রসহ কেমিক্যাল সামগ্রী বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে আশপাশের বাসিন্দারা ঘর ও ফ্যাক্টুরী শ্রমিক কারখানা ছেড়ে আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসে।এ যেন একটি যুদ্ধময় পরিস্থিতি।

প্রত্যক্ষদর্শী, কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক ও নিরাপত্তা প্রহরীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় এ.এস.এম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. নামে কারখানার এসবিপি প্ল্যান্ট (ব্লিচিং পাউডার প্ল্যান্ট) থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।প্রথমে আগুনের তীব্র কম ছিল।কারখানার নিজস্ব আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাপনা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারত।কিন্তু এতে তাদের বেশ গাফিলতি ছিল।তাৎক্ষণিক মুহূর্তেই পাশের শেডগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখায় আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কারখানার সিনিয়র ব্যবস্থাপক (অ্যাডমিন) রেজাউল করিম জানান, কারখানায় দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টার শিফটের কাজ চলছিল। এ সময় ৫৫ থেকে ৫৬ জন শ্রমিক বিভিন্ন প্ল্যান্টে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিল। আগুন দেখে তারা নিরাপদে দ্রুত সরে আসে। এখনো কারও নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরপরই প্রথমে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আরও ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যুক্ত হয়। রাত সাড়ে ১১.৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায় নি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তরিকুল ইসলাম ও শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন।তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে একই কারখানায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড প্ল্যান্টে একবার আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ২৫ জন। ওই ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন হলেও পরবর্তীতে কিছুই জানায়নি কর্তৃপক্ষ।