কোম্পানীগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি:সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মাঝেরগাঁও গ্রামে ভারত থেকে পাচার করা চিনি বহনকারী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম নাঈম (১১)। সে উত্তর রণীখাই ইউনিয়নের বিজয়পাড়ুয়া (মাঝেরগাঁও) গ্রামের আল আমিনের ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাঝেরগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন চোরাকারবারীদের জন্য নিরাপদ স্থান। এই ইউনিয়নের কালাইরাগ, মাঝেরগাঁও, উৎমা, লামাগ্রাম ও দমদমা দিয়ে নিয়মিত চোরাচালান হয়ে থাকে। চিনি, মাদক, গরু-মহিষ কোন কিছুই বাদ যায়না। এসব চোরাচালান থেকে বিজিবি ও পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা উত্তোলন করে মাঝেরগাঁও ও লামাগ্রামের কয়েকজন ব্যাক্তি। তাদের মধ্যে একজন জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। তারা চিনির বস্তা থেকে সাড়ে ৪ শত টাকা করে নিয়ে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল দিয়ে অবৈধ মাদক, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হয়। নাম্বারবিহীন এসব মোটরসাইকেল খুব বেপরোয়া গতিতে চলে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। অবৈধ এসব মোটরসাইকেল দিয়ে পাচার ঠেকাতে না পারলে আরো বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটবে।
নিহতের পিতা আল আমিন জানান, ভারত থেকে চিনি পাচারের সময় বিজিবি একটি মোটরসাইকেলকে ধাওয়া দেয়। তখন মোটরসাইকেলটি বেপরোয়া গতিতে ছুটতে থাকে। বেপরোয়া গতির কারণে রাস্তায় সে আমার ছেলের ওপর মোটরসাইকেলটি উঠিয়ে দেয়। এতে মারাত্মক আহত হয় নাঈম। তাৎক্ষণিক নাঈমকে নিয়ে আমরা হাসপাতালে যাই। শুক্রবার সকাল ৬টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নাঈম মারা যায়।
উৎমা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার তারিকুল বলেন, পাচারকৃত চিনিসহ মোটরসাইকেলটি ক্যাম্পে আনা হয়েছে। বিজিবি অবৈধ পাচার বন্ধে প্রয়োজনীয় টহল জোরদার করেছে। বিজিবি’র নাম ভাঙ্গিয়ে কে টাকা উত্তোলন করে এটা জানা নেই। তবে কেউ এমনটি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মেডিকেল থেকে তারা আমাকে ফোনে বিষয়টি বলেছে। অবৈধ পাচারকারীদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় শিশুটি আহত হয়েছিল। অবৈধ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বিজিবি ও পুলিশের আরো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য ওসমানী মেডিকেলে রাখা হয়েছে। পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কে টাকা উত্তোলন করে তা আমাদের জানা নাই। কেউ এমনটি করলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply