স্টাফ রিপোর্টার,
দৈনিক বিজয়ের বাণী:
টাঙ্গাইলের সখিপুরে ইভটিজারদের হামলায় মৃত করটিয়া সাদত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পড়ুয়া মাজহারুল ইসলামের খুঁনিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিহতের পরিবার। মানববন্ধনে যোগদেন কালিয়ান এলার সর্বসাধারণ, আত্মীয় স্বজন,সহপাঠি ও শিক্ষক,শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় কালিয়ান বাজারে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে প্রায় তিন সহস্রাধিক স্থানীয় নারী-পুরুষ অংশগ্রহন করেন। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাজহারুল ইসলামের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা এসময় বলেন,ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। চিহ্নিত চোর, নেশাখোর ও ইভটিজারদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান। বক্তারা এ সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসময় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন কালিয়ান উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল,বীর মুক্তিযোদ্ধা তমশের আলী,লায়ন ফেরদৌস আলম কলেজের প্রভাষক মোঃ আবু কাওসার, কালিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আসলাম সিকদার নভেল, স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুজ্জামান রতন,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসা স্বপ্না আক্তার, কালিয়ান বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আতিকুজ্জামান সবুজ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম গোলাপ, স্বদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার দপ্তর সম্পাদক আমিন আল মামুন, বহেড়াতৈল ইউনিয়ন যুব আন্দোলন সভাপতি দিদারুল ইসলাম, কালিয়ান বিদ্যানিকেতন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য- উপজেলার কালিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এলাকার বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের সমন্বয়ে এক ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা দেখতে আসা মেয়েদের নানাভাবে উত্যক্ত করে কালিয়ান দোহানিয়া পাড়ার কয়েকজন বখাটে। এ সময় মাজহারুল তাদের উত্যক্ত করতে নিষেধ করলে ঘটনাস্থলেই তাকে কিল, ঘুষি দেয় স্থানীয় বখাটে ইয়ারুল ও তার সহযোগীরা। এর পর খেলা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে আবারো কালিয়ান গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে ইয়ারুল ইসলাম (১৯), রশিদ মিয়ার ছেলে ছাব্বির আহমেদ (১৯),মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে ফরিদ মিয়া,শহীদ মিয়ার ছেলে শান্ত মিয়া,মৃত কুদ্দুসের ছেলে শহীদ মিয়া, মো.আনোয়ারের ছেলে আলমগীর হোসেন আসাদ, মো.আনোয়ারের ছেলে সুজন মিয়া, নজরুল ইসলামের ছেলে স্বাধীন মিয়া, মৃত কুদ্দুসের ছেলে রশিদ মিয়া এবং বাসাইল উপজেলার মান্দারজানি এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে আলী হোসেন,বুলবুল মিয়ার ছেলে তানজিদ,মানিকের ছেলে সিয়াম সহ ২০/২৫ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল লোহার রড ও দা দিয়ে মাজহারুলের উপর আক্রমণ করে।
এ সময় চিৎকার শুনে তার বাবা ও অন্যান্যরা মাজহারুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সখিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে সোমবার রাত প্রায় ১ টা ১৫মিনিটে মাজহারুল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
Leave a Reply