বেনাপোল স্থল বন্দর পথে ভ্রমন খাতে রাজস্ব ঘাটতি ৫১ কোটি টাকাআরো কমার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে
তারিখ ১৭।০১।২০২১রোজ রবিবার
মোঃ নজরুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি
যশোরের বেনাপোল স্থল বন্দরে করোনার প্রভাবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াতে শর্ত আরোপে গত বছর (২০২০) ভ্রমণ খাতে সরকারের রাজস্ব কমেছে ৫১ কোটি ৫৪ লাখ ৫৯ হাজার ৪৫০ টাকা।
এবছর ৩ লাখ ৫ হাজার ৫০০ জন দেশি-বিদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছে। এসময় যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র ১৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
এর আগে ২০১৯ সালে এপথে ভারতে যায় ১২ লাখ ৫৫ লাখ ৯০০ জন যাত্রী। ভ্রমণ কর বাবদ ৬৮ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। নানান প্রতিবন্ধকতায় ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে যাত্রী যাতায়াত কমেছে ৯ লাখ ৫১ হাজার ৪০০ জন।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে ভ্রমণ কর বাবদ রাজস্ব আয়কারী বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার আকতার ফারুক ও বন্দরের সহকারী পরিচালক হিমেল জাহান যাত্রী পরিসংখ্যান ও রাজস্ব আদায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে বৈধভাবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পাসপোর্টে ভারত যাতায়াত শুরু হয়। বেনাপোল থেকে কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। বেনাপোল থেকে রওনা দিয়ে ট্রেন ও বাসযোগে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় কলকাতা শহরে।
যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রথম থেকে এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্য করে থাকে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর আদায়ে কাজ করে থাকে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যাত্রী প্রতি ৫০০ এবং বন্দরের ৪৮ টাকা ভ্রমণ কর নেওয়া হয়। কিন্তু গেল বছর করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ১৩ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দরের স্থলও রেলপথে পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বন্ধ হয় আকাশ পথেও যাত্রী যাতায়াত। এতে যাত্রী যাতায়াত যেমন আশঙ্কাজনক হারে কমে আসে তেমনি ভ্রমণ খাতে সরকারের আয় কমে যায়।
পরবর্তীতে চার মাস পর শর্ত সাপেক্ষে গত ১৫ আগস্ট থেকে কূটনীতিক, অফিশিয়াল, জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসাধারীদের যাতায়াতে সুযোগ হয়। তবে এখনও পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে ট্যুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণ।
এদিকে, প্রতিবছর এত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হলেও এখানে যাত্রীসেবার মান বাড়েনি। অবকাঠামো উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া সেবার নামে বন্দরের ট্যাক্স আদায় করা হলেও বন্দরে তেমন কোনো সেবা নেই যাত্রীদের। ইমিগ্রেশনে যাত্রী ছাউনি না থাকায় যাত্রীদের দীর্ঘ সময় রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ভারতগামী যাত্রী বাপ্পি বলেন, অনেক কষ্টে তিনি মেডিকেল ভিসা পেয়েছেন। তবে ৬ মাসের ভিসা দিলেও মাত্র একবার ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। চিকিৎসা শেষ করতে এতদিন একধানে ভারতে অবস্থান করা অনেক ব্যয়বহুল। এক্ষেত্রে যদি পূর্বের মতো ৩ বার যাতায়াতের সুযোগ থাকতো অনেক উপকৃত হতেন চিকিৎসা সেবীরা।
বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক আতিকুল রহমান জানান, করোনার প্রভাবে যাত্রী যাতায়াত কমে এসেছে। এতে ভ্রমণ খাতে সরকারের আয় কমেছে। যাত্রী যাতায়াত সুবির্ধাতে নতুন জায়গা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, বর্তমানে ভারতগামী যাত্রীদের ৯০ শতাংশ চিকিৎসা ভিসায় এবং ১০ শতাংশ যাচ্ছে ব্যবসা ও সরকারি কাজে। ট্যুরিস্ট ভিসা এখন পর্যন্ত চালু হয়নি। ভারত যাওয়া ও ভারত থেকে ফেরার পথে যাত্রীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা করা নেগেটিভ সনদ প্রয়োজন হচ্ছে এজন্য যাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে
মোবাইল ০১৭১২৯৪৭৮৭১
Leave a Reply